• ঢাকা সোমবার
    ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বড় বদলির গুঞ্জন ডিএমপিতে

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২২, ১২:২৪ এএম

বড় বদলির গুঞ্জন ডিএমপিতে

ইমরান আলী, ঢাকা

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩৫তম নতুন কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। গত শনিবার (২৯ অক্টোবর) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বায়িত্ব নিয়ে কাজও শুরু করেছেন। সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়ও করেন। দুই-একদিনের মধ্যেই কমিশনার তার নতুন পরিকল্পনা নিয়ে পুরোদস্তুর কাজ শুরু করবেন। নতুন কমিশনার যোগদান করলে কর্মকর্তাদের মাঝে এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করে। কেননা কমিশনার তার পছন্দের অফিসারদের নিয়েই চলতে চান। আর ডিএমপি পুলিশের সর্ববৃহৎ ইউনিট। এখানে পূর্ববর্তী যারাই কমিশনার হয়েছেন তাদের পছন্দের মতই অফিসার নিয়েই কাজ করেছেন। আর এ কারণে ডিএমপির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাঝে এক ধরনের অস্থিরতার সঙ্গে বড় বদলির গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

জানা যায়, বাংলাদেশের পুলিশের সর্ববৃহৎ ইউনিট হচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। ৮ টি ক্রাইম ডিভিশন । থানা রয়েছে ৫১ টি। এছাড়াও রয়েছে গোয়েন্দা বিভাগ। গোয়েন্দা বিভাগে ৫০টির বেশি টিম। এছাড়াও পৃথক ডিভিশন। জঙ্গি বিরোধী অভিযান পরিচালনার জন্য পৃথক ইউনিট -কাউন্টার টেরোরিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।

বর্তমানে ডিএমপিতে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিআইজি পদ মর্যাদা) রয়েছেন ৫ জন। তারা হলেন, মীর রেজাউল আলম, এ কে এম হাফিজ আক্তার, মুনিবুর রহমান, মোঃ আসাদুজ্জামান, মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

যুগ্ম কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যাদা) রয়েছেন ১১ জন। তারা হলেন, টুটুল চক্রবর্তী, আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ, বিপ্লব বিজয় তালুকদার, জাকির হোসেন খান, সাইফুল্লাহ আল মামুন, সঞ্জিত কুমার রায়, খোন্দকার নুরুন্নবী, ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান, এস এম মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ জায়েদুল আলম এবং লিটন কুমার সাহা। এছাড়াও ডিসি (পুলিশ সুপার পদমর্যদা) রয়েছেন ৫৩ জন কর্মকর্তা । অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এডিসি (এডিশনাল এসপি) রয়েছেন ১৩২ জন । সহকারী পুলিশ সুপার এসি (সহকারী পুলিশ সুপার) রয়েছেন ১৪৫ জন।

পূর্ববর্তী কমিশনার তথা ড. বেনজির আহমেদ থেকে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় তিনি দ্বায়িত্ব নেন ২০১০ সালের ১৪ অক্টোবর। ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি তিনি ডিএমপি কমিশনার থেকে বদলি হয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালক নিযুক্ত হন। এরপর ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বায়িত্ব নেন আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দ্বায়িত্ব পালন করেন। আর শফিকুল ইসলাম ইসলাম ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর দ্বায়িত্ব নিয়ে ২০২২ সালের ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত দ্বায়িত্ব পালন করেন। একই দিন নতুন কমিশনার হিসেবে দ্বায়িত্ব নেন কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে ডিএমপির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, এ ইউনিটের প্রধান দ্বায়িত্বে যিনি আসেন তখন তার পছন্দের কর্মকর্তাদেরই নিয়ে আসেন। আবার কেউ যদি পূর্বে থেকেই ডিএমপিতে থাকে তবে তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়ে আসা হয়। এর আগে পূর্ববর্তী কমিশনারগণ সেই কাজই করেছেন।

খন্দকার গোলাম ফারুক জানান, যেহেতু কমিশনার হিসেবে তিনি সবেমাত্র জয়েন করলেন সেহেতু একটু সময় নিয়েই তিনি হয়তো তার টিম সাজানোর কাজ করবেন।

কর্মকর্তারা বলেন, পূর্বের কমিশনারের সঙ্গে যারা কাজ করেছেন বর্তমান কমিশনারের অধীনে তারা নাও থাকতে পারেন। বড় ধরনের রদবদল হলেও এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

এদিকে ডিএমপি সদর দফতরসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে অর্থাৎ ডিএমপির ৮ ক্রাইম ডিভিশনের ৫১ থানার ওসিদের মাঝেও এক ধরনের অস্থিরতা রয়েছে। তারা মনে করেন, যে কোন মুহুর্তে তাদেরও বদলি হতে পারে।

নাম প্রকাশ না শর্তে এক ওসি জানান, আতঙ্ক বা অস্থিরতা কিছু না। নতুন ‘স্যার’ যাদের রাখবেন তারাই থাকবে। এছাড়াও যাদের কর্মদক্ষতা রয়েছে পেশার প্রতি দ্বায়িত্বশীল তাদের যেখানে রাখবে তারা সেখানেই তাদের দক্ষতা দেখাবে।

এদিকে জনমুখী পুলিশি সেবা দ্রুত নিশ্চিতকরণ, সমকালীন অপরাধের ধরন ও গতিপথ বিবেচনা করে বিশেষ করে সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণসহ ডিএমপিকে নগরবাসীর আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীকে পরিণত করতে সর্বোচ্চ প্রয়াস থাকবে বলে জানান নবনিযুক্ত ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলম ফারুক।

নগরবাসীকে আশ্বস্ত করে কমিশনার জানান, টিম ডিএমপি সব সময়ই নগরবাসীর পাশে থাকবে। আরও উত্তম ও নিরাপদ ঢাকা বিনির্মাণ এবং নগরবাসীর আরও নিশ্চিন্তে চলাচল নিশ্চিত করতে তিনি সম্মানিত নাগরিকবৃন্দ ও সাংবাদিকবৃন্দের সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

রাজধানীর ট্রাফিক সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে কমিশনার বলেন, ‘বর্তমানে রাজধানীতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে, এজন্য ট্রাফিক জ্যাম হচ্ছে। পূর্ব অভিজ্ঞতা ও দুই সিটি কর্পোরশনের সহযোগিতায় ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করবো।’

থানার সেবার মান নিয়ে তিনি বলেন, ‘সেবার মান বৃদ্ধির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। রুজু করা জিডি ও মামলা কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। থানায় সেবাপ্রার্থীদের সাথে কেউ খারাপ আচরণ করলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেক থানায় আমরা সিসিটিভি স্থাপন করেছি যাতে থানার সেবার মান মনিটরিং করা যায়।’

  আইএ/এআরআই

 

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ