প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২২, ১১:০৬ পিএম
পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা আদান-প্রদানের লক্ষ্যে সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) ১৪ জনকে নিয়ে বৈঠকে বসে বর্তমান নির্বাচন কমিশন। বুধবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে ইভিএমের চেয়ে সিসি ক্যামেরায় জোর দেয়ার কথা জানিয়েছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন।
বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘দেড় শ ইভিএম যে বাজেটে কিনবেন, তার চেয়ে ভালো যতটুকু পারেন সিসি ক্যামেরা লাগান। এ ছাড়া পেপার ব্যালটে ভোট চুরি করলেও সহজে ধরা যায়।’
ব্যালটে ভোটের পক্ষে মত দিয়ে সাবেক এই কমিশনার বলেন, আপনাদের কাছে ভোটার লিস্ট (ছবিসহ) আছে। স্বাক্ষর আছে। সবকিছু আছে। ম্যাচ করা যায়। সূক্ষ্ম কারচুপি আপনারা যেটা দেখলেন ইভিএমে, বাইরের পরিবেশ ফার্স্ট ক্লাস! ঝামেলা নেই। হইচই নেই। কিন্তু ভেতরে কী হচ্ছে? অন্য সিস্টেমে (ব্যালটে) যখন এটা হবে বাইরেও হইচই হবে। কারণ, একা তো পারবেন না। ভোট কাটতে হলেও পাঁচ থেকে ছয়জন লাগবে। এতে প্রতিপক্ষ তো হইচই করবে। এটা আপনারা আরও ভালো করে দেখতে পারবেন। ভোটকক্ষের সিসিটিভি তো কষ্ট করে দেখতে হয়।’
গাইবান্ধার নির্বাচন নিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গাইবান্ধায় যে অ্যাকশন নিয়েছে, এটাকে স্বাগত জানাই। পরের ধাপগুলোতেও যেন একই অবস্থান থাকে। নইলে জাতি লোক দেখানো মনে করবে। সংবিধানের ১১৯-এ বলা হয়ছে, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে না, তাহলে ভোট বন্ধ করতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত পরিবেশ ঠিক না হয়। গাইবান্ধায় যেটা হয়েছে, আগে কোনো কমিশনার এই কাজটি করতে পারেনি। ১৯৯৪-এ যদি এই কাজটা করতে পারত। তাহলে রাজনৈতিক মাঠ অন্যরকম হতো।’
নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে হবে জানিয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আপনাদের নির্বাচনী কর্মচারী-কর্মকর্তা যাদের নিয়ে নির্বাচন করবেন, আগে তাদের আত্মবিশ্বাসী করতে হবে, যাতে তাঁরা মনে করেন আপনারা জাতীয় নির্বাচনে তাঁদের সুরক্ষা দেবেন। বরিশালে যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, ইসির উচিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সমর্থন দেয়া।’
এম সাখাওয়াত হোসেন আরও বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এনআইডি কেন নিতে চাইছে জানি না। এতে ভবিষ্যতে ভোটার তালিকা নিয়ে জটিলতা তৈরি হবে। সরকারকে বোঝালে তো বোঝে। কারণ এই সরকারের আমলে আমরা ভোটার তালিকা করেছি।’
নির্বাচন ভবনে বৈঠকে সাবেক তিন সিইসিসহ অন্তত ১২ জন অংশ নিয়েছেন। তারা হলেন- সাবেক সিইসি আব্দুর রউফ, কে এম নূরুল হুদা, কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, সাবেক ইসি সচিব মোহাম্মাদ সাদিক, মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ, সিরাজুল ইসলাম, হেলাল উদ্দীন আহমেদ এবং ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী ও মোখলেছুর রহমান।
সিইসির সভাপতিত্বে এ সভায় নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা, আনিছুর রহমান, মো. আলমগীর উপস্থিত রয়েছেন।
জেডআই/