• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

তারেক রহমানকে সরাসরি কখনো দেখিনি: বিদায়ী তথ্য সচিব মকবুল

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২২, ১১:০৪ পিএম

তারেক রহমানকে সরাসরি কখনো দেখিনি: বিদায়ী তথ্য সচিব মকবুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

তারেক রহমানকে সরাসরি কখনো দেখেননি এবং তাকে দেখার কোনো ইচ্ছেও তার নেই বলে মন্তব্য করেছেন মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অবসরে পাঠানো তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন। সোমবার (১৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এব কথা বলেন।

বিদায়ী তথ্য সচিব বলেন, ‘সরকার চাইলে যেকোনো সময় যে কাউকে অবসরে পাঠাতে পারেন। আমি জানি না আমাকে কেন অবসরে পাঠানো হলো। মানুষকে ফাঁসি দিলেও তো একটা ট্রায়াল হয়। কিন্তু আমি জানি না কোন কারণে এই সিদ্ধান্ত। তবে সরকারের আদেশ আনন্দের সঙ্গে মেনে নিয়েছি।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ বা সরকার বিরোধী কোনো কাজে তার কোনোরকম সম্পর্ক ছিল না। তারেক রহমানকে সরাসরি কখনো দেখেননি এবং তাকে দেখার কোনো ইচ্ছেও তার নেই।

সরকারবিরোধী তৎপরতার অভিযোগ অস্বীকার করে মকবুল হোসেন বলেন, আপনারা সাংবাদিকেরা অনুসন্ধান করতে পারেন যে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তথ্যসচিবের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল কি না। যদি থেকে থাকে, তাহলে সেটি আপনারা প্রচারও করতে পারেন। আমার পক্ষ থেকে কোনো অসুবিধা নেই।

‘লন্ডনে গিয়ে কারও সঙ্গে বৈঠক করেছেন; এমন একটি কথা চাউর হয়েছে’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিদায়ী তথ্য সচিব বলেন, আমরা লন্ডনে গিয়েছি গত মার্চে। আমরা একটা টিম নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের আশিকুন্নবী আছেন, আমাদের প্রেস। তাকে জিজ্ঞাসা করেন তাহলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

নিজেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হল শাখার সাবেক সহ-সভাপতি পরিচয় দিয়ে মকবুল হোসেন বলেন, ‘যত দিন বেঁচে আছি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়েই বেঁচে থাকব। আমার জানা নেই বা জ্ঞানের ভেতরে নেই, আমার কোনো অপরাধ ছিল কি না বা কোনো অপরাধের কারণে অবসর দেওয়া হয়েছে। তবে সরকার এটি পারে, আইনের মধ্যেই পারে।’

‘শোনা যাচ্ছে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আপনার একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। আপনি অনেক কাজেই মন্ত্রীকে অবহিত করেননি।’ এমন প্রশ্নের জবাবে মকবুল হোসেন বলেন, মানুষ অনেক কথাই বলে। অনেক কিছুই শোনা যায়। শোনা কথা বিশ্বাস না করাই ভালো। আমার পক্ষ থেকে মন্ত্রীর সঙ্গে কেন দূরত্ব থাকবে? আমরা তো সবাই মিলেই কাজ করি। দূরত্বের কথা কেন আসছে আমি জানি না। আমি উনাকে সম্মান করি।

রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে আকস্মিকভাবেই সচিব মকবুল হোসেনকে অবসরে পাঠানোর কথা জানানো হয়। যখন এ খবর তথ্য মন্ত্রণালয়ে যায়, ওই সময় মন্ত্রণালয়ের একটি সভায় ছিলেন মকবুল হোসেন। তথ্যসচিবের দফতরের একজন কর্মকর্তা সেই সভায় গিয়ে তাকে নিজের কক্ষে ডেকে এনে খবরটি জানান।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ধারা ৪৫ অনুযায়ী, জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে সচিব মকবুল হোসেনকে অবসর প্রদান করা হলো। মকবুল হোসেনের চাকরির মেয়াদ ছিল আগামী বছরের ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। তাহলে এখন কেন তাকে অবসরে পাঠানো হলো, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন সচিবালয়ে দায়িত্বরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। তবে সরকারের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা এ বিষয়ে মুখ খোলেননি।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, সচিবকে অবসরে পাঠানোর অন্তর্নিহিত কারণ তিনি জানেন না। অন্তর্নিহিত কারণ বলতে পারবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এ অবস্থায় সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজের দপ্তরে আসেন মকবুল হোসেন। তখন সাংবাদিকেরা তার মন্তব্য জানতে চাইলে বলেন, প্রজ্ঞাপনে অবিলম্বে এই আদেশ কার্যকরের কথা থাকলেও কার্যত এটি রোববার থেকেই কার্যকর হয়েছে। তিনি ব্যক্তিগত কাগজপত্র রেখে গিয়েছিলেন, সেগুলো নিতে এসেছেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবসরে পাঠানো সরকারের সিদ্ধান্ত। সরকার যে কাউকেই এটি করতে পারে। সরকারের আদেশ আনন্দের সঙ্গে মেনে নিয়েছি। 

জেডআই/

আর্কাইভ