প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২২, ১০:১১ পিএম
রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আকতার হোসেনসহ ২৪ নেতা-কর্মীর রিমান্ড শুনানি পেছানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে হাজির না হওয়ায় ২০ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে। রবিবার (১৬ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন দুই মামলায় ২৪ জনকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। অন্যদিকে প্রত্যেকের পক্ষে জামিনের আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য ছিল। ২৪ জনকে কারাগার থেকে আদালতের হাজতখানাতেও নেওয়া হয়। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতা নাজিম উদ্দিনের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই গোলাম হোসেন শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি বলে শাহবাগ থানা প্রতিবেদন পাঠায়।
অন্যদিকে ছাত্রলীগ নেতা আমিনুর রহমানের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ আরিফুল আলম অপু চট্টগ্রামের আদালতে একটি মামলায় সাক্ষ্য দিতে যাওয়ায় আদালতে হাজির হতে পারেননি মর্মে প্রতিবেদন পাঠায়। দুজন তদন্ত কর্মকর্তা না থাকায় মামলার শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হয় বলে বিচারক আদেশে বলেন।
তবে গ্রেফতার ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীদের আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, মূলত তাঁদের কারাগারে আটক রাখার জন্য পুলিশ কৌশল অবলম্বন করেছে। অযথা রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আবার রিমান্ডের আবেদন করে তাঁরা আদালতে হাজির হননি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম বলেন, ‘এই আদালতে রিমান্ডের আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়ায় উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করা যাচ্ছে না। বিশেষ প্রভাবে পুলিশ ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীদের আটক রাখার জন্য এই রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।’
অন্য যাদের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানানো হয়েছে তারা হলেন ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন, মো. সাদ্দাম হোসেন, মো. তসলিম হোসাইন অভি, আব্দুল কাদের, মো. তরিকুল ইসলাম, মামুনুর রশিদ, নাজমুল হাসান, রাকিব, আরিফুল ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, এইচএম রুবেল হোসেন, ইউসুফ হোসেন, মিজান উদ্দিন, বেলাল হোসেন, ওমর ফারুক জিহাদ, আবু কাউছার, জাহিদ আহসান, মোয়াজ্জেম হোসেন রনি, মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, শাহ ওয়ালিউল্লাহ, মো. রাকিব, সাজ্জাদ হোসেন পারভেজ।
১১ অক্টোবর ২৪ আসামির জামিন নামঞ্জুর করা হয়। এরপর ১২ অক্টোবর আসামিদের রিমান্ডে নেয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়।
গ্রেফতারের পর ৮ অক্টোবর ২৪ জনকে হাজির করার পর আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ১১ অক্টোবর প্রত্যেকের জামিন আবেদনের ওপর শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়। ওইদিন শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার তৃতীয় বার্ষিকীতে ৭ অক্টোবর ঢাবিতে সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। সেখানে আসামিরা কাউকে কিছু না জানিয়েই পূর্বপরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে বেআইনিভাবে সমবেত হয়ে উচ্ছৃঙ্খল বক্তব্য ও স্লোগান দিতে থাকেন।
আসামিরা তাদের বক্তব্যে সরকার, সরকারপ্রধান ও বিভিন্ন মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। তখন ছাত্রলীগ প্রতিবাদ করলে আসামিরা রড, হকিস্টিক, বাঁশের লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এ সময় আসামিরা সাড়ে ১০ হাজার টাকা চুরি করে নেন।
এ ঘটনায় ৮ অক্টোবর রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাজিম উদ্দিন ও কেন্দ্রীয় নেতা আমিনুর রহমান বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন।
মামলায় আসামি করা হয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আকতার হোসেনসহ ২৫ জনকে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা দেড় শ জনকে আসামি করা হয়েছে। পরে ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ছাত্র অধিকার পরিষদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে থাকা চেয়ার ও মাইক ভাঙচুর করেন। পুড়িয়ে দেওয়া হয় ছাত্র অধিকার পরিষদের ব্যানার ও ফেস্টুন। এতে পণ্ড হয়ে যায় সমাবেশ।
জেডআই/