• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

পুলিশ বক্সে হামলার পিছনে ছিল পূর্ব পরিকল্পনা

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২২, ০৬:১২ এএম

পুলিশ বক্সে হামলার পিছনে ছিল পূর্ব পরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মিরপুর ও পল্লবী থানা এলাকার পাঁচটি ট্রাফিক পুলিশ বক্সে ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটোরিকশা চালকদের হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। দীর্ঘ দিন ধরে করা পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পুলিশ বক্স ও পুলিশের ওপর হামলা করা হয়। এ ঘটনায় মিজানুর রহমান নামে একজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

হামলার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হামলাকারীরা কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের পুলিশ বক্সের ভেতর থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে নিয়ে এসে রাস্তায় ফেলে মারধর করে। এসময় হামলাকারীরা দল বেঁধে অতর্কিতভাবে ৫টি ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলা ও ভাঙচুর করে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর মিরপুর ও পল্লবী এলাকার প্রধান সড়কে কয়েক হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করে। এসব রিকশার মালিক স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতা। বিভিন্ন মহলের সঙ্গে লিয়াজোঁ রক্ষা করে তারা অবৈধভাবে এসব রিকশা রাস্তায় নামিয়েছে। এছাড়া অবাধে যেন এসব রিকশা চলাচল করতে পারে সেই জন্য বিভিন্ন মহলে নানা সময় মাসিক হারে টাকাও দেয় মালিক পক্ষ।

এদিকে পুলিশের ওপর ও ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলার বিষয়টি সাধারণ বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলে মনে করছে পুলিশও। এ বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজকের হামলার ঘটনাটি মোটেও বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনায় নয়। কোনো পক্ষ আজকের অভিযানের বিষয়টিকে সামনে রেখে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হামলার ঘটনাটি ঘটায়।

এ বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মোহাম্মদ আব্দুল হালিম বলেন, ‍‍`পুলিশ বক্সে ও পুলিশের ওপর সংঘবদ্ধভাবে যে হামলা হয়েছে সেটি পূর্ব পরিকল্পিত। আদলের নির্দেশ অনুযায়ী ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছিল। সেই কাজটি করতে গিয়েই ট্রাফিক পুলিশ তাদের রোষানলে পড়ে।‍‍`

এ হামলার পেছনে অন্য কোনো ইন্ধন আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‍‍`আমরা সব বিষয়কে সামনে নিয়ে তদন্ত করছি। হামলার সঙ্গে যারা জড়িত এবং যাদের ইন্ধনে হামলার ঘটনা ঘটছে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্তের মাধ্যমে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।‍‍`

অন্যদিকে এ বিষয়ে ডিএমপির ট্রাফিকের মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) ইলিয়াস হোসেন বলেন, এসব ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিক পল্লবী ও মিরপুর এলাকার স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। তারা দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে চালক নিয়ে এসে মিরপুর ও পল্লবী এলাকায় অবৈধভাবে এসব রিকশা চালিয়ে ব্যবসা করেন। আজ যখন আমরা আদালতের নির্দেশ মোতাবেক এসব অবৈধ রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছিলাম তখন মালিক পক্ষের ইন্ধনে চালকরা একত্রিত হয়। সর্বশেষ মালিক পক্ষের উসকানিতে চালকরা ইট-পাটকেল ও লাঠি সোটা নিয়ে ট্রাফিক পুলিশের বক্সে হামলা করে।

হামলার ঘটনায় ১৫০ জনকে আসামি করে মামলা

পাঁচটি ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলার ঘটনায় পল্লবী থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) রাতে পল্লবী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আহাদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, পুলিশ বক্সে ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে পল্লবী থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় পুলিশের কাজে বাধা ও সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করছি এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে পল্লবীতে মূল সড়কে অবৈধভাবে চালানোর অভিযোগে ব্যাটারিচালিত দুটি রিকশা জব্দ করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকরা কয়েকটি ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলা করে। এতে এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন।

 

এসএএস

আর্কাইভ