প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২২, ০১:৪৮ এএম
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে চাল ও গমের মজুত আছে। তাই দেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে এ মুহূর্তে চালের মজুত আছে প্রায় ১৬ লাখ টন। ধান ৩৭ হাজার টন ও গম ১ লাখ ৬৯ টন। এটা আমরা সাধারণত আশা করি ১০-১২ লাখ টন থাকা উচি। কার্তিক-আশ্বিন মাসে প্রায় ১৮ লাখ টন খুবই ভালো মজুত বলে আমি মনে করি। কাজেই এ নিশ্চয়তা দিতে পারি, দেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের চিরবঞ্চিত, অবহেলিত ও চিরশোষিত কৃষকের উন্নয়নে স্বাধীনতার পরপরই যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। কৃষি গবেষণায় মেধাবীদের আকৃষ্ট করতে বঙ্গবন্ধু সরকারি চাকরিতে কৃষি গ্র্যাজুয়েটদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা প্রদান করে কৃষির আধুনিকায়নে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তাছাড়া, কৃষি এবং কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে ‘বঙ্গবন্ধু পুরস্কার তহবিল’ গঠন করেন।”
মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মতোই বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি ও কৃষকবান্ধব। তাই তিনি কৃষির সাফল্যের অন্যতম কারিগর কৃষক, কৃষি বিজ্ঞানীসহ কৃষির সাথে সম্পৃক্তদেরকে সম্মাননা জানাতে ও তাদেরকে উৎসাহিত করতে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) সম্মাননা প্রবর্তন করেছেন। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার কৃষিকে সম্মানজনক পেশায় পরিণত করেছে।’
কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশের কৃষিখাতে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ৪৪ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬’ প্রদান করা হচ্ছে। ১৪২৫ বঙ্গাব্দের জন্য ১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আর ১৪২৬ বঙ্গাব্দের জন্য ২৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এ পুরস্কার পাবেন।
কৃষিমন্ত্রী জানান, পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে তিনটি স্বর্ণ, ১৬টি রৌপ্য ও ২৫টি ব্রোঞ্জ পদক দেয়া হবে। এছাড়া বিজয়ীদের সনদপত্র, পদক ও নগদ টাকা দেয়া হবে। স্বর্ণপদকপ্রাপ্তরা এক লাখ টাকা, রৌপ্যপ্রাপ্তরা ৫০ হাজার টাকা ও ব্রোঞ্জপ্রাপ্তরা ২৫ হাজার টাকা পাবেন।
তিনি বলেন, “কৃষিখাতের প্রতি বঙ্গবন্ধুর কৃষকদরদী নীতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চির অবারিত হাত কৃষিকে করেছে আরও সুসংহত। ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’ প্রবর্তনের মাধ্যমে কৃষিতে আগ্রহী জনশক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার বিজয়ী সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কৃষি ক্ষেত্রে নানাভাবে অবদান রেখে চলেছেন। একইসঙ্গে, কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) সম্মাননা দেয়ার ফলে কৃষি পেশার মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।”
বুধবার (১২ অক্টোবর) সকাল ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬ প্রদান করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব বলাই কৃষ্ণ হাজরা এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেডআই/