প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২২, ০৪:৫২ পিএম
আজ রোববার (৯ অক্টোবর) বিশ্ব ডাক দিবস। এই দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘পোস্ট ফর প্ল্যানেট’। বাংলায় যার অর্থ হলো: ‘বিশ্বের জন্য ডাকঘর’। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ডাক অধিদফতর এ দিবসটি পালন করবে।
এ উপলক্ষে ডাক অধিদফতরের উদ্যোগে আলোচনা সভা, পত্রলিখন প্রতিযোগিতা এবং বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
১৮৭৪ সালের ৯ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের বার্ন শহরে ২২টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গঠিত হয় ‘ইউনির্ভাসেল পোস্টাল ইউনিয়ন’। পরবর্তীতে এ সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে উত্থাপিত একটি প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে ১৯৬৯ সালে ৯ অক্টোবরকে বিশ্ব ডাক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ইউনিভার্সেল পোস্টাল ইউনিয়ন (ইউপিইউ) এবং আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) সদস্য পদ লাভ করে। এরপর থেকে দেশে প্রতিবছর বিশ্ব ডাক দিবস পালিত হয়ে আসছে।
মোস্তাফা জব্বার বিবৃতিতে বলেন, আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল চিঠিপত্রের যুগ শেষ হওয়ায় দুর্দশাগ্রস্ত ডাক সার্ভিসকে একটা ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়া। আমরা ইতোমধ্যে সেটা অনেকটা পেরেছি। ই-কমার্সের জন্য ডাকঘর এখন একটা নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
দেশব্যাপী ডাকঘরের যে বিশাল অবকাঠামো ও জনবল আছে তা দেশের অন্য যে কোনো প্রতিষ্ঠানের নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, হিমায়িত খাবার থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় ক্রেতার হাতে পৌঁছে দিতে ডাকঘরের বিকল্প নেই।
করোনাকালে কৃষকের ফল, সবজি পরিবহন থেকে শুরু করে চিকিৎসা সরঞ্জাম পৌঁছে দিতে ডাক সেবার অবদান তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, জরুরি সেবার আওতায় ডাকঘর একদিনের জন্যও বন্ধ রাখা হয়নি। ডাকঘর ডিজিটাইজেশনের অভিযাত্রায় প্রেরক এবং গ্রাহকগণ ডাকদ্রব্যের সর্বশেষ অবস্থান বা বিতরণের তথ্য ট্রেক করেই জানতে পারছেন।
তিনি বলেন, ডাকঘর ডিজিটাইজেশনের অভিযাত্রার ধারাবাহিকতায় পয়েন্টস অব সেলস মেশিনের মাধ্যমে ডাকদ্রব্যে সংযুক্ত বারকোড স্ক্যান করে প্রয়োজনীয় তথ্য ইনপুটসহ প্রেরক প্রাপকের ঠিকানার ছবি সংযুক্ত করে বুকিং সম্পন্ন করার ফলে গ্রাহকগণ সহজেই বারকোড স্ক্যান করে তাদের ডাকদ্রব্যের অবস্থান শনাক্ত করতে পারছেন।
এ ছাড়াও গ্রাহকদের সুবিধার্থে ঢাকা জিপিওসহ গুরুত্বপূর্ণ ডাকঘরসমূহে ডিজিটাল সিরিয়াল সিস্টেম চালু করা হয়েছে বলেও তিনি বিবৃতিতে উল্লেখ করেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় ডিজিটাল যুগের উপযোগী ডাক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় ডাকঘর ডিজিটাইজেশনের পথ নকশা আমরা তৈরি করছি। খুব শিগগিরই তা বাস্তবায়ন শুরু হবে। ইতোমধ্যে ১৪টি শর্টিং সেন্টার নির্মাণ ও ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। একই সঙ্গে রেলে চিলিং বগি ও ডাকের অন্যান্য গাড়িতে চিলিং ভ্যান চালু করার উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, ডাক ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করার পাশাপাশি কর্মরত ৪৫ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীকেও ডিজিটাল দক্ষতা প্রদানের মাধ্যমে ডাকঘর ডিজিটাল করার কাজ আমরা শুরু করেছি। এতে উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডের ডিজিটাইজেশনের ভিত তৈরি হয়েছে ।
তিনি বলেন, ডাক বিভাগের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি করা এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সহসাই ডাকসেবা কাঙ্ক্ষিত মানে উন্নীত হবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘করোনাকালে দেশের সকল জিপিও, প্রধান ডাকঘরসমূহ জরুরি প্রয়োাজনে জনস্বার্থে সীমিত পরিসরে খোলা রাখার তার সিদ্ধান্তটি ছিল মানুষের অচল জীবনযাত্রা সচল রাখার অত্যন্ত কার্যকর একটি পদক্ষেপ। এ সময় এ সকল ডাকঘর থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের লেনদেনের পাশাপাশি সীমিত আকারে ডিজিটাল-কমার্স, মোবাইল মানি অর্ডার এবং পার্সেল সেবা প্রদানের জন্য কাউন্টার খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ রাজধানীর তেজগাঁও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা সহায়ক সরঞ্জাম পিপিই, কিটস এবং গণসচেতনতা মূলক লিফলেট ইত্যাদি সামগ্রী বিনা মাশুলে দেশব্যাপী অতি দ্রুততার সঙ্গে পাঠানো হয়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সরকার ঘোষিত ‘মুজিববর্ষ-২০২০’ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের অংশ হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ প্রণীত কর্মসূচিতে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের ওপর স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনীয়র শীট, অ্যালবাম ও শীটলেট প্রকাশ করে ডাক বিভাগ ইতিহাসের স্বাক্ষী হতে পারায় আমি গর্ববোধ করছি। বিবৃতিতে তিনি বিশ্ব ডাক দিবস -২০২২’র সার্বিক সফলতা কামনা করেন।’