প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২, ০১:২৫ এএম
মা অপহরণ হননি আত্মগোপনেই ছিলেন বলে জানিয়েছেন খুলনায় নিখোঁজ রহিমা বেগমের মেয়ে আলোচিত মরিয়ম মান্নান। তিনি বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যে আইনজীবীকে বলে দিয়েছি, মামলাটি তুলে নিতে। তখন আসামিদের প্রতি সন্দেহ হওয়ার যথেষ্ট কারণ ছিল। এখন তো মনে হচ্ছে মা আত্মগোপনে ছিলেন। তাই মামলাটি তুলে নেব। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে আদালতের কাছে ক্ষমাও চাইবো।’
এর আগে গত ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসার উঠানের নলকূপে পানি আনতে যান রহিমা বেগম। কিন্তু এক ঘণ্টা পরও তিনি বাসায় না ফেরায় তার সন্তানেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। নলকূপের পাশে তাদের মায়ের জুতা, ওড়না ও পানির পাত্র পড়ে থাকলেও মাকে তারা খুঁজে পাননি। এ ঘটনায় ওই রাতেই রহিমা বেগমের ছেলে দৌলতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরদিন তার মেয়ে আদুরী আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা করেন। এ ছাড়া বিষয়টি র্যাবকেও জানানো হয়। এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মায়ের সন্ধান চেয়ে ঢাকায় মানববন্ধনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে দৌড়ঝাঁপ করে আসছিলেন সন্তানরা।
পরে নিখোঁজের ২৯ দিন পর ২৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে রহিমা বেগমকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
আলোচিত মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগমকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারের পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়াতে চলছে নানা সমালোচনা। তবে রহিমা বেগমকে উদ্ধারের পর পুলিশ বলছে, তিনি নিজেই স্বেচ্ছায় ‘আত্মগোপনে’ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে জনৈক কুদ্দুসের বাড়িতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর যান রহিমা বেগম; যিনি এক সময় খুলনাতে রহিমা বেগমের বাসায় ভাড়া থাকতেন। ওই পরিবারের অন্যদের সাথে কথা বললে তারা জানান, এর আগে রহিমা বেগম চট্টগ্রাম ও গোপালগঞ্জের মোকসেদপুরে ছিলেন। তিনি সেখানে আশ্রয় চান এবং গত ৭ দিন এখানেই অবস্থান করছিলেন।
সেই বাসা থেকে রহিমা বেগমের ব্যবহৃত পুরোনো পোশাকও উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে তাকে খুলনায় নিয়ে আসা হয়। আশ্রয় দেয়া পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানিয়েছে, এই ২৮ দিন তিনি কখনও চট্টগ্রাম, কখনও মোকসেদপুরে অবস্থান করছিলেন। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আশ্রয় দেয়া পরিবারের কর্তা আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে আল আমিন, তার ও তার ভাইয়ের স্ত্রীকে পুলিশ নিয়ে এসেছে। আপাতত রহিমা বেগমকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হবে।
এর মধ্যে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বওলা গ্রামের ঝোপ থেকে উদ্ধার হওয়া লাশটি নিজের মায়ের বলে দাবি করেছিলেন মরিয়ম মান্নান। ‘লাশ শনাক্তে’পরদিন বেলা ১১টার দিকে তিনি ফুলপুর থানায় যান। এ সময় মরিয়ম লাশটি তাঁর মায়ের দাবি করে নিয়ে যেতে চান। সেখানে লাশের পরিহিত কাপড় দেখেন। এরপর মরিয়ম দাবি করেন, লাশটি তার মায়ের। পরে মরিয়ম মান্নান ফুলপুর থানায় ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করেন।
এআরআই