প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২, ১০:১৬ পিএম
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অসুস্থ মাকে ভর্তি করাতে গিয়ে কর্মচারীদের দ্বারা চিকিৎসক হয়রানির ঘটনায় দুইজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত দুই কর্মচারী মাসুদ ও ঝর্ণা বেগমকে বরখাস্ত করা হয়।
এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে এবং এর নেপথ্যে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা জানতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।বিষয়টি নিশ্চিত করে হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরীফুল হাসান জানান, চিকিৎসকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুই কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হরিপদ সরকারকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোস্তফা জামান চৌধুরী এবং ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল হাসান। কমিটিকে পাঁচ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, রমেক হাসপাতালের অর্থোসার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট এ.বি.এম রাশেদুল আমীর তার অসুস্থ মাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে গিয়ে বকশিস সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রাশেদুল আমীর। এর অনুলিপি দেয়া হয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য, সিটি মেয়র, রমেক অধ্যক্ষ, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার বরাবর।
অভিযোগে রাশেদুল আমীর উল্লেখ করেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর তার মা হৃদরোগে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি করাতে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন স্বজনরা। জরুরি বিভাগে ভর্তির জন্য ২৫০ টাকা দাবি করা হয়। পরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মা পরিচয় জানতে পেরে তারা ৫০ টাকা ভর্তি বাবদ নেন। যদিও হাসপাতালে নির্ধারিত ভর্তি ফি ২৫ টাকা এবং সরকারি কর্মকর্তার মা এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে ভর্তি ফি না নেয়ার কথা।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভর্তি পরবর্তী সিসিইউতে তার অসুস্থ মাকে নেয়া হলে সেখানে জরুরি বিভাগে কর্মরত দুজন জোরপূর্বক তার ব্যক্তিগত সহকারীর কাছ থেকে ২০০ টাকা বকশিস নেন। এ সময় তাদের আমার নাম পরিচয় এবং রোগী সম্পর্কে জানানো হলে তারা বলেন ‘যে স্যারের মা হোক টাকা দিতে হবে’। পরবর্তীতে আমি রাতে আসার পর মায়ের শয্যা পাশে অবস্থানকালে সিসিইউতে কর্মরত ওয়ার্ড বয় পরিচয়ধারী মাসুদ আমার কাছে সরাসরি টাকা দাবি করে। এ সময় আমি সেই কথাবার্তা ভিডিও ধারণ করি। এই ঘটনা আমার কাছে অত্যন্ত মানসিক পীড়াদায়ক এবং অপমানকর। যে প্রতিষ্ঠানে আমি সেবা দিয়ে যাচ্ছি, সেখানে আমি হয়রানির শিকার হচ্ছি তা সত্যিই দুঃখজনক। আমি নিজে হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা হয়েও যদি হয়রানির শিকার হই, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা তো সহজেই অনুমেয়।
অভিযোগের বিষয়টি যথাযথ অনুসন্ধান পূর্বক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের হয়রানি বন্ধ এবং সেবার মান বৃদ্ধিতে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান রাশেদুল আমীর।
এএল/