প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২, ০৫:৩৩ পিএম
মিয়ানমারের মর্টার শেল নিক্ষেপে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু নোম্যানস ল্যান্ডে এক রোহিঙ্গা নিহত ও শিশুসহ পাঁচ রোহিঙ্গা নাগরিক আহত হন। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে দেশটির রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মোকে ডেকে চায় বাংলাদেশ। তার প্ররিপ্রেক্ষিতে মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরীকে ডেকে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ইয়াঙ্গুনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরীকে ডেকে কথা বলেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্ট্র্যাটিজিক স্টাডিজ ও ট্রেনিং ডিপার্টমেন্টের মহাপরিচালক উ জাউ ফিউ উইন।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বৈঠকের বিষয়টি জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, বৈঠকে বাংলাদেশে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উত্থাপিত বিষয়গুলোর মধ্যে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে গুলিবর্ষণের ঘটনা এবং বর্তমানে বিরাজমান পরিস্থিতি সম্পর্কে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেন মহাপরিচালক উ জাউ ফিউ উইন।
মহাপরিচালক অবহিত করেন, আরাকান আর্মি (এএ) এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসা (এআরএসএ) গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিপি-৩১-এ বর্ডার গার্ড পুলিশের তাউংপিও (বাম) ফাঁড়িতে মর্টার শেল দিয়ে আক্রমণ করে। এরমধ্যে তিনটি মর্টার শেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডের ভেতরে পড়ে।
তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, এএ এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসা আবার একই অস্ত্র ব্যবহার করে ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর বিপি-৩৪-এ বর্ডার গার্ড পুলিশের তাউংপিও (ডান) ফাঁড়িতে আক্রমণ করে। তখন ৯টি মর্টার শেল বাংলাদেশের মাটিতে পড়ে।
মহাপরিচালক জোর দিয়ে বলেন, এএ এবং সন্ত্রাসী গ্রুপ এআরএসএ ইচ্ছাকৃতভাবে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে নেতিবাচক পরিণতি ঘটাতে এ ধরনের হামলা চালিয়ে আসছে।
মহাপরিচালক আরও বলেন, মায়ানমার অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। সর্বদা দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনে চলার পাশাপাশি বাংলাদেশসহ সব দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে মিয়ানমার।
মিয়ানমারের পক্ষ সীমান্ত এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানান মহাপরিচালক। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পূর্ণ ও পারস্পরিক সহযোগিতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
বৈঠকে মহাপরিচালক উল্লেখ করেন যে গত ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশকে কূটনৈতিক চ্যানেলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবস্থিত এএ এবং আরসা সন্ত্রাসীদের পরিখা এবং ঘাঁটির তথ্য দেওয়া হয়েছিল। অবিলম্বে এই বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এবং সেগুলো ধ্বংসের জন্য মিয়ানমারের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
পরে মহাপরিচালক ঘটনার সত্যতা সম্বলিত একটি অনানুষ্ঠানিক পেপার বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের কাছে হস্তান্তর করেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে গোলাগুলির ঘটনার প্রকৃত বিবরণ মিয়ানমারের দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া ৭ সেপ্টেম্বর ও ১৭ সেপ্টেম্বর কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশেকে অবহিত করেছে।
জেডআই/