প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২, ০৩:৩১ এএম
মানবিক সহায়তা দিয়ে অপরাধীদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে র্যাব উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন। তিনি বলেন, ‘সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূল করতে র্যাব ফোর্সেস শুধু অভিযান নয়, কার্যকরী পন্থায় বিভিন্ন মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে অপরাধীদের ফিরিয়ে আনার জন্য।’
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কক্সবাজার লং বিচ হোটেলে আয়োজিত ‘নবজাগরণ: অপরাধকে না বলুন’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।
কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানে ৩৬ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাদের সেলাই, ড্রাইভিং, ট্যুরিস্ট গাইড, ফটোগ্রাফি, রেস্টুরেন্ট সার্ভিস এবং সার্ফিং প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ চলাকালীন প্রশিক্ষণার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রশিক্ষণ শেষে তাদের অনেকের চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের বিভিন্ন উপকরণও দেয়া হবে। ‘
চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘আমি আশা করি, এখানে যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তারা স্বাবলম্বী হয়ে ভবিষ্যতে বিভিন্ন সামাজিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবেন। একই সঙ্গে অন্যান্যদেরও বিরত রাখবেন। যারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত তারা সে পথ থেকে ফিরে এসে আপনাদের দেখে স্বাবলম্বী হতে উৎসাহ পাবেন।’
অপরাধমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে নতুন উদ্যোগ হাতে নিয়েছিল র্যাব উল্লেখ করে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘অপরাধপ্রবণ লোকদের চিহ্নিত করে নবজাগরণ কর্মসূচির আওতায় সুন্দর জীবন গঠনের পথে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হলো অপরাধে জড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের অপরাধে জড়াতে নিরুৎসাহিত করা। এটা কার্যকর করে সমাজে অপরাধ প্রবণতা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। নবজাগরণের মাধ্যমে সামাজিক, পারিবারিক ও মনস্তাত্ত্বিক অন্তরায় সৃষ্টি করে এলাকাভিত্তিক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যেন সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অপরাধে না জড়ানোর ব্যাপারে সচেতন থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূল করতে র্যাব শুধু অভিযান নয়, এরইমধ্যে বিভিন্ন সময়ে কার্যকরী পন্থায় বিভিন্ন মানবিক উদ্যোগ নিয়েছে। শুধুমাত্র গ্রেফতারের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ নির্মূল নয় বরং আত্মসমর্পণের সুযোগ দিয়ে এবং পুনর্বাসনের মাধ্যমে তাদের সাধারণ জীবনে ফিরে আসতে সহায়তা করছে র্যাব। ‘নবদিগন্তের পথে’ শীর্ষক ডি-রেডিক্যালাইজেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে ১৬ জন বিপথগামী জঙ্গি আত্মসমর্পণ করে সাধারণ জীবনে ফিরে এসেছেন।’
র্যাব মহাপরিচালক জানান, ‘চলো যাই যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে’- এই স্লোগানকে সামনে রেখে র্যাব মাদকবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে। প্রতিনিয়ত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনের হাতে সোপর্দ করা হচ্ছে।
এছাড়াও র্যাবের অভিযানে সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, র্যাবের অন্যতম একটি সফলতা সুন্দরবন দস্যুমুক্ত করা। যেখানে আত্মসমর্পণ করে ৩২টি বাহিনীর ৩২৮ জন জলদস্যু। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে প্রত্যেককে নগদ আর্থিক সহায়তা, র্যাবের পক্ষ থেকে আর্থিক, বর্ষপূর্তিতে সহায়তা ও বিভিন্ন উৎসবে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘র্যাব যেভাবে পূর্ববর্তী সময়ে অপরাধ দমনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে এসেছে, তেমনিভাবে ভবিষ্যতেও সেই ধারা অব্যাহত থাকবে। অপরাধ প্রবণতা প্রতিরোধের লক্ষে দেশব্যাপী আরও অধিকতর কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে র্যাব। বর্তমানে র্যাব জল, স্থল ও আকাশে অভিযান পরিচালনার সক্ষমতা সম্পন্ন একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।’
র্যাব মহাপরিচালক আরও বলেন, বিভিন্ন সময়ে কিছু অপরাধী দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। আমরা সেইসব ব্যক্তিদেরও খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
এআরআই