প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২, ১০:৩৭ পিএম
ক্ষমতাসীন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা (এমপি) পদত্যাগ না করেই নির্বাচনে যাওয়ার সুযোগ গ্রহণ করলে অন্যান্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার সমান ক্ষেত্র নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এটা লেভেল-প্লেইং ফিল্ডের অন্তরায়। যে কারণে সুষ্ঠু, অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন বাস্তবায়নের জন্য বিষয়টি রহিত করে আইনি সংস্কার গ্রহণ করা প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন : গণতান্ত্রিক সুশাসনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এ মত প্রকাশ করে।
অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আগামী নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা। সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় লেভেল-প্লেইং ফ্লিড নিশ্চিত করা। এজন্য আইনি সংস্কার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করি।
তিনি বলেন, আস্থা যদি অর্জন করতে হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে কি করণীয়। তবে আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে মন্ত্রী-এমপি হিসেবে বহাল থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের লেভেল-প্লেইং ফ্লিড নষ্ট করা হয়। আইন প্রয়োগ সংস্থার এক ধরনের চাপ থাকে। সে কারণে লেভেল-প্লেইং ফ্লিড তৈরি করা সম্ভব হয় না।
দ্বিতীয়ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। সে বিষয়টি কীভাবে নিরপেক্ষ করা যায় সেটা ভেবে দেখা দরকার। আরেকটি বিষয় হচ্ছে নির্বাচন কমিশন যে রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে, সেখানে অংশীজনের কথা বলা হয়েছে। অংশীজনের তথ্য সরবরাহসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি যেন না হয় সে বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে। কারণ আমরা আগের নির্বাচনে ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে প্রতিবন্ধকতা তৈরির উদাহরণ দেখেছি, বলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআইবি পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান।
টিআইবি’র প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ভোট বাক্স বা ইভিএমের ব্যবহারসহ সবকিছুই অর্থহীন হয়ে পড়ে যদি সব রাজনৈতিক দলের জন্য সুষ্ঠু, অবাধ প্রতিযোগিতার সুযোগ না থাকে। ভোটার ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখতে পান তার ভোটটি আগেই দেওয়া হয়ে গেছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভোটারদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে সব দলের প্রতিনিধির উপস্থিতির সুযোগ নিশ্চিত করা হয়নি এবং ভোট গণনার সময় তাদের উপস্থিতিও নিশ্চিত করা হয়নি। দশম এবং একাদশ উভয় সংসদ নির্বাচনের সময়ই অত্যন্ত জোর দিয়ে টিআইবি বলেছিল, প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় একজন সংসদ সদস্য বিদ্যমান থাকা অবস্থায় নতুন সংসদ সদস্য পদের জন্যে নির্বাচনে পক্ষপাত বা প্রভাব বিস্তারের সুযোগ ও ঝুঁকি সৃষ্টি করে। সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিতর্কিতভাবে কয়েকটি কেন্দ্রের ফল দেরিতে ঘোষণার মাধ্যমে ক্ষমতাসীন মেয়রকেই নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। তাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সমতার সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে পঞ্চদশ সংশোধনীর সংশ্লিষ্ট ধারা বাতিল করে পূর্বাবস্থায় ফিরে যেতে হবে। প্রয়োজনে আইনি সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকারের কার্যক্রম সীমিত রুটিন কাজে সীমাবদ্ধ করা।
জেডআই/