প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২, ০১:০৮ এএম
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর অত্যন্ত সফল ও সন্তোষজনক হয়েছে। আমাদের সরকার ও শেখ হাসিনাই ভারতের কাছ থেকে সবকিছু আদায় করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ড. হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর অত্যন্ত সফল এবং ফলপ্রসূ হয়েছে। এই সফরে অনেকগুলো চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে ভারতের স্থলভাগ ব্যবহার করে বিনা শুল্কে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির সুযোগ। এটির জন্য আমরা বহু বছর ধরে চেষ্টা করে এসেছি। এতদিন ধরে ভারতের স্থলভাগ ব্যবহারের বিষয়ে যে অনেকটা বাধা ছিল তা দূরিভূত হয়েছে। এখন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম এবং মংলা বন্দর দিয়ে ভারতের স্থলভাগের ওপর দিয়ে নেপাল এবং ভুটানের সাথে পণ্য আমদানি এবং রপ্তানি করতে পারবে। এটি একটি বড় অর্জন।`
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর অত্যন্ত সফল ও সন্তোষজনক হয়েছে এবং দুই দেশের সরকার তা ব্যক্ত করেছেন। অন্যদিকে বিএনপির এতে মন খারাপ হয়েছে। সে কারণে উনারা এখন আবোল তাবোল বকছেন।’
‘আমাদের সরকার ও শেখ হাসিনাই ভারতের কাছ থেকে সবকিছু আদায় করেছেন’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতে মামলা করে আমরা ভারতের কাছ থেকে সমুদ্রসীমা আদায় করেছি। চুক্তি হওয়ার ৪০ বছর পরও আমাদের ছিটমহলের যে দাবি আদায় হয়েছিল না, সেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আমরা করতে সক্ষম হয়েছি। ২০টি পণ্য ছাড়া বাংলাদেশের সমস্ত পণ্য রপ্তানিতে ভারত শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে, যেগুলো অন্য কেউ আদায় করতে পারেনি। আর কুশিয়ারা নদীর পানি নিয়েও আমাদের পক্ষে যে চুক্তি হয়েছে সেটি একটি বড় অর্জন।
তিস্তা নদীর পানিবন্টন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো ধরনের আপত্তি নেই। কিন্তু ভারতের বিধি-বিধান অনুযায়ী সেখানে রাজ্য সরকারের একটি অনুমোদন লাগে। রাজ্যের পক্ষ থেকে যেহেতু আপত্তি আছে সে কারণে এটি এতোদিন ধরে এগোয়নি, তবে এটি নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। আশা করছি নিশ্চয়ই খুব শীঘ্রই এটির সমাধান হবে।’
ড. হাছান বলেন, ‘আর কেন এতো ভালো সফর হলো সেজন্য বিএনপির মির্জা ফখরুল সাহেবদের মন খুবই খারাপ। উনাদের কাজ তো বিভ্রান্তি ছড়ানো। সেটি নিয়েই তারা ব্যস্ত আছেন। অথচ ভারতে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়া গঙ্গার পানির কথা বলতে ভুলেই গিয়েছেন, যেটি তিনি নিজেই ব্যক্ত করেছিলেন, সেই ভিডিও ফুটেজ এখনো আমার কাছে আছে, আপনাদের কাছেও আছে। যে দলের নেত্রী ভারতে গিয়ে বাংলাদেশের পানি হিস্যার কথা ভুলে যায় তারা আবার এগুলো নিয়ে কথা বলে কোন মুখে!’
তিনি বলেন, তিস্তা চুক্তি না হওয়ার পেছনে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বাধা নয়। এটি হয়নি সংবিধান অনুযায়ী রাজ্য সরকারের কারণে। রাজ্যের বাধা থাকায় চুক্তিটি হয়নি। আমরা আশা করছি অচিরেই তিস্তা চুক্তিটি হবে। কুশিয়ারা নদীর পানি নিয়ে যে চুক্তি হয়েছে সেটি আমাদের একটি বড় অর্জন।
এসময় প্রেস ক্লাবে বৃক্ষরোপণ করেন মন্ত্রী। এমন আয়োজনের জন্য জাতীয় প্রেস ক্লাবকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এই কার্যক্রম দেশের মানুষকে উৎসাহিত করবে। দেশে এখন ছাদবাগান হচ্ছে। ১৯৮৭ সালে দেশে আসার সঙ্গে সঙ্গে শেখ হাসিনা কৃষক লীগকে দিয়ে সারা দেশে গাছ লাগিয়েছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সাবেক সভাপতি সাইফুল আলমসহ জাতীয় প্রেসক্লাবের নেতারা।
জেডআই/