বিশেষ প্রতিবেদক
পিত্তথলির পাথর অপসারণ করতে গিয়ে রোগীর লিভার কেটে ফেলেছেন এক ডাক্তার। অপারেশনের পরপরই বিষয়টি বুঝতে পেরে রোগীর স্বজনদের রক্ত আনতে বলে পালিয়ে যান তিনি। সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর মৌচাকের সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা বোরহান উদ্দীনকে (৪৮) তার পিত্তথলির পাথর অপসারনের জন্য দুপুর ১২টায় সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলে ভর্তি হন। এর পর মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (বিকেলে এখানে চিকিৎসা দেন) মো. মাহবুবুর রহমান কচি বিকেল সারে ৫টার দিকে রোগীর অপারেশন শুরু করেন। অপারেশন শেষে মাহবুবুর রহমান রোগীর স্বজনদের দ্রুত রক্ত আনতে বলে হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান। এর পর আর তাকে পাওয়া যায়নি।
রোগীর শ্যালক মহিউদ্দিন সরকার গণমাধ্যমে বলেন, ডাক্তার অপারেশনের আগে কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেননি। তাছাড়া রোগীর লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত জেনেও কোন প্রকার প্রস্তুতি ছাড়াই অপারেশন শুরু করেন। সে সময় ডাক্তার বলেছিলেন তিনি শুধু একটি ছিদ্র করে পিত্তথলির ভেতর থেকে পাথর বের করে ফেলবেন। কিন্তু তিনি পিত্তথলি কাটতে গিয়ে লিভার কেটে ফেলায় রোগীর প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে আইসিইউতে স্থানান্তর করে।
মহিউদ্দিন আরো বলেন, বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্তই ৫ ব্যাগ রক্ত লেগেছে রোগীর। আইসিইউর কর্তব্যরত ডাক্তার জানান, আরো কমপক্ষে ৫ ব্যাগ রক্ত লাগবে। রোগীর শারিরীক অবস্থারও অবনতি হয়েছে।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টির জন্য ভুল স্বীকার করেছে। কর্তৃপক্ষ জানায়, ডাক্তার মো. মাহবুবুর রহমান কচি কোন কিছু না জানিয়েই হাসপাতাল কমপ্লেক্স ছেড়ে গেছেন। কিভাবে ডাক্তার তাদের না বলে পালালেন, সে বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। ডাক্তারের এই ভুল চিকিৎসার দায় নিতে অপারগতা জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ অবস্থায় রোগীর জীবন নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন স্বজনরা। এই রিপোর্ট লেখার সময় (রাত সারে ১০টা) রমনা থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শূরু করেছে বলে থানা থেকে জানান হয়।
এইচএ
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন