• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

হাতিরঝিলে ওয়াটার ট্যাক্সি বন্ধ ও বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ

প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২২, ০১:৪৭ এএম

হাতিরঝিলে ওয়াটার ট্যাক্সি বন্ধ ও বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর হাতিরঝিলে সব ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদসহ চার দফা নির্দেশনা দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে লেক মাছের অভয়ারণ্য করতে ওয়াটার ট্যাক্সি সার্ভিস চলাচল বন্ধের পরামর্শ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৪ মে) সকালে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের স্বাক্ষরে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৫৫ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।

রায়ে হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পকে 'জনগণের জাতীয় সম্পত্তিঘোষণা দিয়ে এর বৈশিষ্ট্যসৌন্দর্য এবং জলভূমি রক্ষায় ৪টি নির্দেশনা ও ৯টি সুপারিশ জারি করা হয়েছে।

৫৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ এ রায়ে আদালত ৬০ দিনের মধ্যে প্রকল্পের মধ্যে স্থাপন করা হোটেলরেস্তোরাঁ এবং দোকানসহ সব ধরনের ব্যবসায়িক কাঠামো উচ্ছেদ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

রায়ে বলা হয়েছে, 'হাতিরঝিলের পানি ও এর নান্দনিক সৌন্দর্য অমূল্য সম্পদযা কোনোভাবেই নষ্ট করা যাবে না।'

এর আগে গত বছরের ৩০ জুন একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেঞ্চ এ বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দেন।

২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পের নির্মাণ কাজের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে আইনজীবী রিপন বাড়ইয়ের ওই রিট আবেদন করেছিলেন।

প্রকল্পের লে-আউট প্ল্যানের বাইরে নির্মাণ হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ রায়ে হাইকোর্ট প্রকল্পের মধ্যে হোটেলরেস্তোরাঁ ও দোকানসহ সব ব্যবসায়িক কাঠামো বরাদ্দ ও নির্মাণ অবৈধ ঘোষণা করেন।

হাইকোর্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে 'হাতিরঝিল লেক সুরক্ষাউন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষগঠনের পরামর্শ দিয়েছেন।

এ প্রকল্পের স্থায়ী পরামর্শক হিসেবে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রকৌশল বিভাগ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪তম ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডকে নিয়োগের সুপারিশ দেন হাইকোর্ট।

অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে আছে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য ভূগর্ভস্থ আন্তর্জাতিক মানের টয়লেট স্থাপনসবার জন্য নির্দিষ্ট দূরত্বে বিনা খরচে পানীয় জলের ব্যবস্থা করাবাইসাইকেল ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য হাঁটার পথ এবং পৃথক লেন নির্মাণওয়াটার ট্যাক্সি নিষিদ্ধ করা।

এ ছাড়া হাতিরঝিলকে মাছের অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তোলা এবং বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে প্রকল্পের নামকরণ এবং এর নিরাপত্তাউন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য রাজস্ব বাজেট থেকে অর্থ বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়েছে রায়ে।

আবেদনের শুনানিকালে আবেদনকারীদের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ হাইকোর্টকে বলেন, 'প্রকল্প এলাকায় অবৈধভাবে রেস্টুরেন্টসহ কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছেযা ওই এলাকার মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে এবং প্রকল্পের সৌন্দর্য নষ্ট করছে।'

লে-আউট প্ল্যানের বাইরে স্থাপনা নির্মাণের কারণে হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পের নান্দনিকতা নষ্ট হচ্ছে বলেও তিনি যুক্তি দেন।

আবেদনের শুনানির সময় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পক্ষে আইনজীবী ইমাম হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

জেডআই/

আর্কাইভ