
প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৫, ০৯:০৫ পিএম
বিদেশি বিনিয়োগের জন্য দেশে আগে কখনও এত অনুকূল পরিবেশ ছিল না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় চীনা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫-এ অংশগ্রহণের জন্য ঢাকায় এসেছেন বিনিয়োগকারীরা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত আট মাস ধরে বাংলাদেশে বিনিয়োগ সহজ করার লক্ষ্যে কাজ করেছি। বিদেশি বিনিয়োগের জন্য দেশে আগে কখনও এত অনুকূল পরিবেশ ছিল না।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রবর্তিত বিনিয়োগ পরিবেশ, বাণিজ্য এবং শ্রম-সম্পর্কিত সংস্কার বাংলাদেশে আরও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করবে এবং চীনা ও দক্ষিণ কোরিয়ার উৎপাদন কারখানা দেশে স্থানান্তরকে সহজতর করবে। বিডার (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন প্রতি মাসের ১০ তারিখে কোরিয়ান এবং চীনা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মাসিক প্রাতঃরাশ বৈঠকের আয়োজন করবেন।
বিডা কর্তৃক এই বৈঠকের আয়োজন করা হলেও বিনিয়োগকারীদের উত্থাপিত বিভিন্ন সমস্যা শোনার জন্য তাদের কয়েকটিতে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ নিবন্ধন এবং তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যা সমাধানের জন্য একটি হটলাইন এবং কল সেন্টার পরিষেবা প্রতিষ্ঠারও প্রস্তাব করেছেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যেকোনো বিনিয়োগকারী এই নম্বরে কল করে তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন এবং আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
এ সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সঙ্গে তার সাম্প্রতিক বৈঠকের বিষয়টিও তুলে ধরেন। প্রেসিডেন্ট শি শীর্ষ চীনা কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য তার প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন। বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তার আহ্বানে আমি মুগ্ধ হয়েছি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে বাজার তৈরি রয়েছে। আপনি নেপাল এবং ভুটানের মতো স্থলবেষ্টিত দেশগুলোতেও সরবরাহ করতে পারেন। কিছু বৃহৎ চীনা কোম্পানি ইলেকট্রিক ভেহিকল (ইভি) রূপান্তর, লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি উৎপাদন, বায়ু টারবাইনের মতো নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস এবং অফশোর ফটোভোলটাইক সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
চীনা কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা চট্টগ্রামে ডেডিকেটেড চীনা ইকোনমিক জোন এবং মংলায় চায়নিজ ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছেন; যেখানে চীন একটি সমুদ্রবন্দর আধুনিকায়নের কাজ করতে চলেছে।
সভায় অংশ নেন অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, পরিবহন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, টেক্সটাইল, মোবাইল টেলিযোগাযোগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সরবরাহ এবং আইটি পরিষেবার মতো খাতে প্রধান বিশ্বব্যাপী কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী কমপক্ষে ৩০ জন বিশিষ্ট চীনা বিনিয়োগকারী।
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কোম্পানি মেইনল্যান্ড হেডগিয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট পলিন এনগান।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের একটি দল। এ সময় বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন ও এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।