সিটি নিউজ ডেস্ক
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে রংতুলির ছোঁয়ায় প্রস্তুত রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। চৌহদ্দিতে রং ও তুলি হাতে দেয়াল লিখনে ব্যস্ত চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বিপরীতে দক্ষিণ পশ্চিম থেকে পূর্ব প্রান্তজুড়ে লম্বাটে দেয়ালের টুকরো অংশে কোথাও ‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা, ‘তোমার কোলে, তোমার বোলে, কতই শান্তি ভালোবাসা’, কোথাও ‘মাতৃভাষায় যাহার শ্রদ্ধা নাই সে মানুষ নহে’, আবার কোথাও ‘আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়ির তীরে’ ইত্যাদি লেখনীর ছোঁয়ায় মাতৃভাষা বাংলার ইতিহাস ও ঐহিত্যকে ফুটিয়ে তোলার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
অমর ২১শে ফেব্রুয়ারির দিনটিতে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানটি গেয়ে বায়ান্নার ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের চৌহদ্দি ও আশপাশের এলাকায় দেয়াল লিখন ও রংতুলির আঁচড়ে প্রস্তুতি সম্পন্নের লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে। আর মাত্র একদিন পর অর্থাৎ ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার পর থেকেই রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, বিদেশি কূটনৈতিক দূতাবাসের কর্মকর্তা, মন্ত্রী, সচিব, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে শ্রদ্ধা জানাবেন।
এ উপলক্ষে কয়েকদিন ধরে শহীদ মিনারের ধোয়ামোছাসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম চলছে। শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মূল বেদিসহ আশপাশে রং করার কাজ প্রায় সম্পন্ন। হেমন্তের মিষ্টি রোদেলা মধ্য দুপুরে রঙের ওপর সূর্যের আলো পড়ে শহীদ মিনার ঝলমল করছে। চারপাশে শিকল ও বেড়া দিয়ে সাধারণ মানুষের যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে। আনসার সদস্যরা পাহারা দিচ্ছেন প্রবেশপথে।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অসংখ্য সিসিটিভি ও মাইক লাগানো হচ্ছে। ২১শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে প্রতিবছর চারুকলার শিক্ষার্থীরা রংতুলিতে দেয়ালে লিখে থাকেন। শেষ মুহূর্তে এখন তারা সে কাজটি করছেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা দিয়ে যারা যাতায়াত করছেন তারা শহীদ মিনার ও আশপাশের এলাকা থেকে খুব সহজেই বুঝে নিচ্ছেন অমর একুশ দরজায় কড়া নাড়ছে।
শুক্রবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘চলমান করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে জনসমাগম এড়াতে গত বছরের মতো এবারও সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচজন এবং ব্যক্তিপর্যায়ে সর্বোচ্চ দুজন একসঙ্গে শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে সবাইকে অবশ্যই যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও মাস্ক পরিধান এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের উদ্দেশ্যে আসা সবাইকে করোনা টিকার সনদ সঙ্গে রাখার অনুরোধ জানান ঢাবি উপাচার্য।
জনি/ফিরোজ
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন