• ঢাকা শনিবার
    ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হচ্ছে শাবিপ্রবির ভিসিকে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২২, ০৭:০৩ এএম

বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হচ্ছে শাবিপ্রবির ভিসিকে

মুনওয়ার আলম নির্ঝর

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিটি নিউজকে জানিয়েছেন, দ্রুতই ভিসি ফরিদ উদ্দিনকে ছুটিতে পাঠিয়ে দেয়া হবে৷ এরপর সিদ্ধান্ত হবে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি থাকবেন কি-না। 

উপচার্যের পদত্যাগ নানা দাবিতে টানা ১৬৩ ঘণ্টার অনশন ভেঙেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষক জাফর ইকবালের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা এ সময় অনশন ভাঙে। জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের বলেন, তাদের সব দাবি মেনে নেওয়া হবে। এরপর থেকেই গুঞ্জন ওঠে, ভিসিকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে! 

আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা চায় ভিসি ছুটিতে চলে যাক। এজন্য তারা দ্রুত ভিসির বাসভবনের গেটের সামনের অংশ দ্রুত খালি করে দিবেন। আর ভিসি চলে না যাওয়া পর্যন্ত তাদের 'সফট' কর্মসূচি গুলো গোলচত্বর কিংবা মুক্তমঞ্চে আয়োজন করা হবে।  
 
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সামাল দিতে জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে একটা দল জাফর ইকবালের বাসায় বৈঠক করেছে বলে একটা সূত্র দাবি করে। সেই সূত্র ধরে এই দলে থাকা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা অসীম কুমার উকিলের সাথে কথা বলে সিটি নিউজ। তিনি বৈঠকের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান তবে ভিসির পদত্যাগ প্রসঙ্গে বলেন, শিক্ষার্থীদের পাশে গোটা দেশ আছে৷ তাদের সব দাবিই পূরণ হবে। তবে এটা সময় সাপেক্ষ। 

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) শাবিপ্রবি ইস্যু নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি বলেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা তাদের সব দাবি বাস্তবায়ন করব।

এই বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। 

শাবিপ্রবিতে আসার পর থেকেই জাফর ইকবাল ও তার সহধর্মিণী ড. ইয়াসমিন হক বলেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হবে উচ্চপর্যায়ের এমন আশ্বাস পেয়েই তারা এখানে এসেছেন। তবে সেটার জন্য কিছুটা সময় লাগবে। ফরিদ উদ্দিনের ছুটি কিংবা পদত্যাগের যে গুঞ্জন তা নিয়ে সিটি নিউজ তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

বুধবার (২৬  জানুয়ারি) বেলা ৩ টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ছাত্রীদের একটি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রভোস্টের দুর্ব্যবহার এবং হলে বিছানা সংকট ও খাওয়ার সমস্যা সমাধানের দাবিতে দিন দশেক আগে শুধু ওই হলের ছাত্রীদের যে আন্দোলন শুরু হয় তা দুদিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে রূপ নেয়।

ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়া ছাত্রীদের উপর ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার অভিযোগ ওঠে।

এর আগে ১৬ই জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের পিটুনি, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ, সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনা ঘটার পর থেকে আন্দোলন জোরদার হয়। উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি।

আন্দোলন সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে এবং শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলগুলো ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। সেটিও মেনে নেয়নি শিক্ষার্থীরা।

জনি

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ