প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২১, ০৯:০৩ পিএম
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বুধবার সকাল থেকেই গোটা
সুন্দরবন ৪ থেকে ৬
ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়।
পানির তীব্রতায় ১৯টি জেটি, ১০টি
অফিস স্টাফ ব্যারাক, ৬টি নৌযান, দুটি
গোলঘর, একটি ওয়াচ টাওয়ার
এবং বনের মধ্যে হাঁটাচলা
করার ২৪টি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত
হয়েছে। এতে অন্তত ৬০
লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন
পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয়
বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন।
এ
দিকে বুধবারের অস্বাভাবিক জোয়ারে মারা গেছে চারটি
হরিণ। জোয়ারের পানিতে আরও বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির
আশঙ্কা বন বিভাগের। সুন্দরবনের
নদনদীগুলো উত্তাল থাকায় বনের সব এলাকায়
এখনও পৌঁছাতে পারেনি বন বিভাগ।
বুধবার
বিকেলে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের বলেশ্বর নদের বগী, দুবলার
চর, কচিখালী এলাকায় ভাসমান অবস্থায় এই হরিণ তিনটির
মরদেহ পায় বন বিভাগ।
বৃহস্পতিবার সকালে আরও একটি হরিণের
মরদেহ পায় বন বিভাগ।
হরিণগুলোকে উদ্ধার করে মাটিচাপা দেয়া
হয়েছে।
সুন্দরবন
পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও)
মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বনের নদীখালে স্বাভাবিক
জোয়ারের চেয়ে পানির উচ্চতা
৫ থেকে ৬ ফুট
পানি বৃদ্ধি পায়। জোয়ারের প্রবল
স্রোতে বনের বন্যপ্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত
হয়েছে। এখন পর্যন্ত চারটি
মৃত ও একটি জীবিত
হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। নদনদীতে
এখনও প্রবল ঢেউ থাকায় পানি
ওঠা সব এলাকায় পৌঁছানো
সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর বনের সব
এলাকায় যাওয়ার পর ক্ষতির পরিমাণ
আরও বাড়তে পারে।
সুন্দরবনের
সবচেয়ে উঁচু এলাকা করমজল
বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রেও পানি উঠেছে। তবে
বন্যপ্রাণীগুলো নিরাপদ রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রজনন
কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির।
তিনি
বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস ও বাতাসে কুমিরের
দুটি শেড নষ্ট হয়েছে।
পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা বন্যপ্রাণীগুলোকে নিরাপদ
স্থানে নিয়েছি। ঝড়ে আমাদের কোনো
বন্যপ্রাণীর ক্ষতি হয়নি।
সাতক্ষীরার
শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, রামপাল ও মোংলা উপজেলায়
দুই হাজার ৯১টি চিংড়ি খামারের
মাছ ভেসে গেছে বলে
প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে জেলা মৎস্য বিভাগ।
এই চার উপজেলার প্রায়
১০০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মোরেলগঞ্জ
উপজেলায় প্রায় ৩০ কিলোমিটার কাঁচাপাকা
সড়ক নদীতে মিশে গেছে। এ
উপজেলার ৩ হাজারেরও অধিক
পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। মোংলা
উপজেলার চিলা, চাঁদপাই ও বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের
প্রায় ৮০০ পরিবার পানিবন্দী
হয়ে পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কমলেশ মজুমদার। পানিবন্দীদের উদ্ধারের পাশাপাশি খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে বলে
জানান তিনি।
এএএম/এম. জামান