প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২২, ০৪:৫৩ এএম
রাজধানীর
মোহাম্মদপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলছে কিশোর গ্যাং চক্রের উৎপাত। মাদক কেনাবেচা ও
সেবন, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সাধারণ মানুষকে
হয়রানি এবং বিভিন্ন রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে আসছিল তারা। অবশেষে কিশোর গ্যাং ‘কিং
অব মোচর’ ও ‘ভাইব্বা ল কিং’-এর
ছয় সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-৩।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) র্যাব-৩ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আটককৃতরা হলো- মো. হৃদয়, মো. রাসেল, মো. শাওন, মো. তাওহীদ, মো. রাসেদ ও মো. খাইরুল ইসলাম।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, র্যাব-৩এর একটি দল জানতে পারে যে, মোহাম্মদপুর এলাকায় কিশোর গ্যাং চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে মাদক কেনাবেচা ও সেবন, এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সাধারণ মানুষকে হয়রানি এবং বিভিন্ন রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে আসছে। এরপর র্যাব-৩এর একটি দল সোমবার দুপুর সোয়া একটার দিকে মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় একটি অভিযান চালায়। অভিযানে কিশোর গ্যাংয়ের ছয় সদস্যকে আটক করা হয়।
আটকদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, গত রোববার ‘কিং অব মোচর’ কিশোর গ্যাংয়ের দুই সদস্যের জন্মদিন ছিল। ওই জন্মদিন পালনের জন্য তারা চাঁদ উদ্যান এলাকায় কনসার্টের আয়োজন করে। ওই কনসার্টকে কেন্দ্র করে সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্বে ‘কিং অব মোচর’ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ‘ভাইব্বা ল কিং’ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ওপরে আক্রমণ করে। এতে দুই গ্রুপ ক্ষিপ্ত হয়ে এলোপাতাড়ি পথচারীদের ওপর আক্রমণ করে। তাদের আক্রমণে আল আমিন নামে এক পথচারী গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়।
র্যাব জানায়, ‘ভাইব্বা ল কিং’ কিশোর গ্যাং নিজেদের এলাকার সিনিয়র দাবি করে থাকে। কিন্তু ‘কিং অব মোচর’ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তাদের আধিপত্য মেনে নিতে রাজি নয়। দুই পক্ষ গ্যাংয়ের সদস্যরা আধিপত্য বিস্তারের জন্য দলবদ্ধভাবে মোটরসাইকেলের মহড়া দিয়ে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এ ছাড়াও তারা মোটরসাইকেল ব্যবহার করে রিকশা, ভ্যান, সিএনজি ও বাসযাত্রীদের টার্গেট করে যাত্রীদের ব্যাগ বা পার্টস ছিনতাই করে থাকে। তারা লালতলা তিন রাস্তার মোড়ে দলবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে মাদক সেবন করে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে থাকে।
র্যাবের ভাষ্য মতে, ‘কিং অব মোচর’ কিশোর গ্যাংয়ের দলনেতা হচ্ছে রাশেদ। তার দুর্ধর্ষতা এবং ক্ষিপ্রতার জন্য সে এলাকায় টাইগার রাশেদ নামে পরিচিত। তাদের অপরাধমূলক ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। এ ছাড়াও আটক ব্যক্তিরা মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় সংঘবদ্ধ হয়ে অপরাধ করে থাকে। কিশোর গ্যাংয়ের দুটি গ্রুপের প্রতিটিতেই ২৫ থেকে ৩০ জন সদস্য রয়েছে, যারা সংঘবদ্ধভাবে অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। গত ২২ নভেম্বর ‘ভাইব্বা ল কিং’ কিশোর গ্যাংয়ের ৯ জন সদস্য র্যাবের হাতে আটক হয়েছিল। কিন্তু তারা জামিনে বের হয়ে আবারও একই অপরাধে জড়িত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর এলাকায় একাধিক মামলা রয়েছে।
আটক মো. হৃদয় মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী থানার বিক্রমপুর গ্রামের মো. মজিবর রহমানের ছেলে, মো. রাসেল ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন থানার দালালপুর গ্রামের মৃত জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে, মো. শাওন ঢাকার ডেমরা থানার চনপাড়া গ্রামের মো. আলী কাউছার পিন্টুর ছেলে, মো. তাওহীদ পটুয়াখালী জেলার সদর থানার তিতকাটা গ্রামের মো. আব্দুল মান্নানের ছেলে, মো. রাসেদ শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানার বাঘার চর গ্রামের মো. মাছেদ ওরফে বাছেদের ছেলে এবং মো. খাইরুল ইসলাম কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানার রুপজদী গ্রামের মো. আবুল কাশেমের ছেলে।
জেডআই/এম. জামান