প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২২, ১০:৫৬ এএম
যায় যায়
পৌষ। শীতের নেই কোনো রেশ। খেয়ালি প্রকৃতি অধিকার করে নিয়েছে আবহমান বাংলাকে। এখন
যেন আর পঞ্জিকার অনুশাসন মানছে না। এই ঘোর শীতকালেও শীতের দেখা নেই। শীতের তীব্রতা
না ছড়িয়েই প্রমাদ গুনছে পৌষ। শৈত্যপ্রবাহ কবে আসবে- এই আকাঙ্ক্ষা নিয়ে প্রহর গুনছে
শীতবিলাসী মানুষ।
পৌষ মাসের ব্যতিক্রম আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটতে চলেছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় তাপমাত্রা আবারও কমতে শুরু করবে। কারণ আকাশে জড়ো হওয়া মেঘ বৃষ্টি ঝরাতে পারে। থেমে থেমে ওই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি দু–তিন দিন চলতে পারে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, মঙ্গলবার থেকে ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগ এবং কুমিল্লা ও নোয়াখালী এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি শুরু হওয়ার ফলে দেশের বেশির ভাগ এলাকার দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। এরপর ধারাবাহিকভাবে তাপমাত্রা কমে আবারও শীতের অনুভূতি ফিরে আসতে পারে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর ১৫ জানুয়ারি থেকে দিন ও রাতের তাপমাত্রা দ্রুত কমে আবারও শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যায়। আর উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় দিনের তাপমাত্রা এক লাফে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়ে। ফলে দিনভর রোদের খরতাপ শীতের অনুভূতি কমিয়ে দেয়। রাতেও সেই উষ্ণতার ছাপ ছিল। ফলে শীত প্রায় বিদায় নিয়েছে বলে মনে হচ্ছিল।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে আসা মেঘের দল উত্তরাঞ্চল দিয়ে দেশের সীমানায় প্রবেশ করেছে। ওই পথ দিয়ে শীতের হিমেল বাতাস এত দিন দেশে প্রবেশ করছিল। মেঘ এসে ওই পথে বাধার প্রাচীর তৈরি করে। ফলে শীতের ঠাণ্ডা বাতাস দেশের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। ফলে তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করে।
এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ‘মঙ্গলবার দেশের বেশির ভাগ এলাকায় মেঘ এসে পড়বে। এতে রোদের দাপট কমে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। আর রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তির দিকে থাকবে। তবে বৃষ্টি চলে এলে কিছুটা ঠাণ্ডা বাতাসও এর সঙ্গে যোগ দেবে। ফলে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ঠাণ্ডার অনুভূতি বেড়ে যেতে পারে।
সোমবার রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গত ৫ বছরের ডিসেম্বর মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত সময়কালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আর দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়।
শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গত রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তবে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতে রোদের পাশাপাশি কুয়াশাও আছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর তা দ্রুত বাড়তে পারে। আকাশে মেঘ আর দৃষ্টিসীমায় কুয়াশার কারণে যানবাহনগুলোকে সাবধানে ও আলো জ্বালিয়ে চলাচল করতে পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা। পরদিন সকাল পর্যন্ত ওই কুয়াশা থাকতে পারে।
জেডআই/এম. জামান