প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২২, ০৭:৫৪ পিএম
স্ত্রী
মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার নগরের পাঁচলাইশ
থানায় মামলা করেছিলেন। এবার সেই মামলায় তাকেই গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেছে পুলিশ ব্যুরো
অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। যদিও মিতুর বাবার দায়ের করা মামলায় এখন কারাগারে আছেন বাবুল
আক্তার।
রোববার
(২ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পরিদর্শক আবু
জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক।
তিনি
সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘যেহেতু আসামিদের জবানবন্দি ও তদন্তে বাবুল স্ত্রী মিতু খুনে জড়িত
থাকার তথ্য পাওয়া গেছে, তাই তাকে তার করা মামলায়ও আসামি করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতার দেখানোর
জন্য আদালতে আবেদন করা হলে আদালত ৯ জানুয়ারি তার উপস্থিতিতে শুনানির জন্য দিন ধার্য
রেখেছেন।’
এর
আগে গত ৩০ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই ওই মামলায় বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার
দেখানোর আবেদন করে। সেদিন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদনটি করেন
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর
ফারুক।
একই
ঘটনায় গত বছরের ১১ মে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের করা মামলায় গ্রেফতার হয়ে বাবুল আক্তার
কারাগারে রয়েছেন।
উল্লেখ্য,
২০২১ সালের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল
আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে সেই
বছরের ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই। আগের
মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দাখিলের পর ১২ মে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নগরের
পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
মামলার
বাকি সাত আসামি হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক
প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু,
মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু ও শাহজাহান মিয়া।
এর
আগে গত বছরের ১০ মে মামলার বাদী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো
কার্যালয়ে ডেকে আনা হয় তাকে। ১১ মে সারা দিন বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
২০১৬
সালের ৫ জুন ভোরে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে।
এ ঘটনায় ঢাকায় অবস্থান করা মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ
থানায় মামলা করেন। মামলার অভিযোগে নিজের জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে
হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে তিনি অভিযোগ করেন। ঘটনার কয়েক দিন পরই মামলার তদন্তে
নতুন মোড় নেয়। একপর্যায়ে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা রয়েছে
বলে অভিযোগ করেন তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন।
পাঁচলাইশ
থানা পুলিশের পর চট্টগ্রামের ডিবি পুলিশ মামলাটির তদন্ত করে। তারা প্রায় তিন বছর তদন্ত
করেও অভিযোগপত্র দিতে ব্যর্থ হয়। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলাটি
তদন্তের ভার পায় পিবিআই। মিতু হত্যার পর বাবুল আক্তার প্রথমে ঢাকার মেরাদিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে
উঠেছিলেন। ২০১৬ সালের ২৪ জুন বাবুল আক্তারকে ঢাকার ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে এনে প্রায়
১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
নূর/এএমকে/এম. জামান