প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২২, ০৯:৫৭ পিএম
বিল
পরিশোধ না করায় চিকিৎসাধীন যমজ শিশুকে জোর করে বের করে দেন হাসপাতালের মালিক। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে
আহমেদ নামে এক শিশুর নির্মম মৃত্যু হয়। অপর শিশুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা
মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় রাজধানীর শ্যামলীর
বেসরকারি সেই হাসপাতালের মালিককে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে শ্যামলী থেকে তাকে আটক করা হয়। র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘বিল পরিশোধ সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জেরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যমজ শিশুকে জোর করে বের করে দেয়ার পর আহমেদ নামে এক শিশুর মৃত্যু হয় এবং অপর শিশুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের মালিককে আটক করা হয়েছে। তবে আটক হাসপাতালের পরিচালকের নাম জানায়নি র্যাব।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘এ বিষয়ে আজ বিকেলে কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।’
গত ৩১ ডিসেম্বর ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্টে ভোগা ছয় মাস বয়সী যমজ দুই শিশু—আহমেদ ও আব্দুল্লাহকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন মা আয়েশা বেগম। কিন্তু বিল পরিশোধ সংক্রান্তবিষয়ক ঝামেলায় বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে হাসপাতালটি থেকে এই দুই শিশুকে বের করে দেয়া হয়।
আয়েশা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘ঠাণ্ডাজনিত কারণে গত ৩১ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে দুই শিশুকে ভর্তি করা হয়। গত রোববার বলা হয়েছে, তাদের এনআইসিইউতে নেয়া লাগবে। সেখানে সিট না মেলায় সাভারে কোনো একটি হাসপাতালে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় সেখানকার এক অ্যাম্বুলেন্সচালক (দালাল) তাদের পাশের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। জানান, সেখানেও সরকারি হাসপাতালের মতো খরচ কম।
ওই চালকের কথামতো ভর্তি করালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৬ দিনে দুই শিশুর চিকিৎসার বিল দেখায় ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা। এরই মধ্যে কয়েক দফায় ৫০ হাজার ৫শ’ টাকা দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন শিশু দুটির মা।
তিনি বলেন, ‘আমরা এত টাকা কোথায় পাব। তারপরও ৫০ হাজার পাঁচশো টাকা দিয়েছি। বাকি টাকা না দিতে পেরে তাদের হাতে-পায়ে ধরেছি কিন্তু লাভ হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে সন্তানসহ হাসপাতাল মালিক আমাকে জোর করে বের করে দেয়। এরপর শাহিন নামে এক যুবককে দিয়ে দুই শিশুসহ ঢামেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। এখানে আনার আগেই আমার এক শিশুর মৃত্যু হয়।’
আয়েশা বেগম আরও বলেন, ‘আমার স্বামী বিদেশে থেকে অনেক কষ্টে টাকা পাঠিয়েছেন। তারা ভুয়া বিল করে আমার কাছ থেকে টাকা দাবি করেন। আমার একটা ছেলেকে হারিয়েছি। আরেক সন্তান আব্দুল্লাহকে ঢামেক হাসপাতালে পুলিশ ভর্তি করিয়ে দিয়েছে। তার অবস্থাও ভাল নয়। আমাদের বাসা সাভারের রেডিও কলোনির বাতপাড়া এলাকায়।’
জেডআই/ডা