• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

বিল দিতে না পারায় আইসিইউ থেকে বের করে দেয়ায় শিশুর মৃত্যু

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২২, ০৭:০৬ এএম

বিল দিতে না পারায় আইসিইউ থেকে বের করে দেয়ায় শিশুর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) এর বিল দিতে না পারায় রাজধানীর শ্যামলীর আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল থেকে দুই জমজ শিশুকে জোরপূর্বক বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর দুই ঘন্টা পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়ার পথে আহমেদ (৬ মাস) নামে এক শিশু মারা যায়। আরেক শিশু আব্দুল্লাহকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হলে আহমেদকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

শিশু দুটির মা আয়েশা বেগম জানান, ঠান্ডাজনিত কারণে গত শনিবার (১ জানুয়ারি) তাদের সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানে আইসিইউতে সিট পাচ্ছিলাম না। পরের দিন রোববার (২ জানুয়ারি) এক দালাল কম টাকায় ভাল চিকিৎসার কথা বলে শ্যামলীর আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, ওই হাসপাতালে ৭২ ঘণ্টায় ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা বিল আসে। আমার সামর্থ্যের বাইরে থাকায় এত টাকা বিল দিতে পারিনি। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে মারধর করে। তাদের পায়ে ধরলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার পর অসুস্থ বাচ্চাসহ আমাকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়। পরে ফার্মেসিতে থাকা ওষুধের টাকা নেয়ার জন্য শাহিন নামের একজনকে আমার সঙ্গে ঢাকা মেডিকেলে পাঠায়। যাওয়ার পথে আমার ছেলে আহমেদ মারা যায়। আমার সঙ্গে কেউ নেই, আমি একা। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

আয়েশা বেগম আরও বলেন, আমার স্বামী বিদেশে থেকে অনেক কষ্টে টাকা পাঠিয়েছেন। তারা ভুয়া বিল করে আমার কাছ থেকে টাকা দাবি করেন। আমার একটা ছেলেকে হারিয়েছি। আরেক সন্তান আব্দুল্লাহকে ঢামেক হাসপাতালে পুলিশ ভর্তি করিয়ে দিয়েছে। তার অবস্থাও ভাল নয়। আমাদের বাসা সাভারের রেডিও কলোনির বাতপাড়া এলাকায়।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শ্যামলী থেকে আসা এক নারীর যমজ শিশুদের ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসার পথে আহম্মেদ নামে এক শিশু মারা যায়। ওই নারী জানান যে, শ্যামলীর আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে টাকা দিতে না পারায় বের করে দিয়েছে। ঢামেকে আনার সময় তার ৬ মাস বয়সী ছেলে মারা যায়। টাকা দিতে না পারায় তাকে মারধর ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে চিকিৎসা না দিয়ে বের করে দেয় বলে জানতে পেরেছি।

বাচ্চু মিয়া বলেন, শাহিন নামে একজনকে আটক করা হয়েছিল। ওই হাসপাতালের মালিকের নাম গোলাম সারোয়ার ও ফার্মেসির মালিকের নাম জাহাঙ্গীর আলম। হাসপাতালটি শ্যামলীর রূপায়ন সেলফ ফোর্ড টাওয়ারের ১০ তলায়।

অর্ণব

আর্কাইভ