প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৫, ২০২১, ০১:১০ এএম
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব ‘বড়দিন’। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) দিনটি উদযাপিত হবে। দিনটিকে ঘিরে রাজধানীর গির্জাগুলোতে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
এ বছর করোনা পরিস্থিতি
বিবেচনায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শুধু খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের গির্জায় প্রবেশ নিশ্চিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে ডিএমপির পক্ষ থেকে।
ডিএমপি
সূত্রে জানা যায়, এবার
নিরাপত্তা পরিকল্পনা অনুযায়ী গির্জাগুলোতে গোয়েন্দা পুলিশ থাকবে। গির্জাসহ অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশে ইভটিজিং প্রতিরোধে পুলিশের বিশেষ টিম বিশেষ নজরদারিতে
নিয়োজিত থাকবে।
ডিএমপির
মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বড়দিনের
অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করতে এবং নিরাপদে
ধর্মানুরাগীরা যাতে সুষ্ঠুভাবে গির্জায়
যাতায়াত করতে পারেন সে
লক্ষ্যে কিছু নিরাপত্তা নির্দেশনা
দিয়েছে পুলিশ।
প্রতিটি
গির্জায় নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। ডিএমপির প্রতিটি বিভাগকে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট
নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এবারের ক্রাইম কনফারেন্সেও এর ওপর গুরুত্ব
দিয়ে কর্মকর্তাদের সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ডিএমপির নিরাপত্তা নির্দেশনার পাশাপাশি করোনায় সরকারি স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পরিপালনে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি।
এ নিয়ে জানতে চাইলে
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ’এবার বড়দিনে গির্জাগুলোয়
অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। আর্চওয়ে বসানো হয়েছে। সেখানে তল্লাশি করা হবে। তল্লাশির
মধ্য দিয়েই গির্জায় প্রবেশ করতে হবে।’
তিনি
বলেন, ’খ্রিস্টান সম্প্রদারের বাইরের কেউ যাতে গির্জায়
প্রবেশ করে ঝামেলা বা
অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার অবতারণা করতে না পারে,
সেজন্য খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী শনাক্ত করে গির্জায় প্রবেশের
বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো
হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিটি গির্জায় পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে
পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।’
তিনি
আরও বলেন, ’সাইবার পেট্রোলিং আমাদের নিয়মিত কাজ। সাধারণত সংখ্যালঘু
সম্প্রদায়ের কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান
থাকলে বিভিন্ন গ্রুপ নানা অপপ্রচার চালায়।
হামলা করতে উৎসাহিত করে।
এগুলো যাতে এবার না
হয়, সেজন্য বড়দিনে সাইবার পেট্রোলিং বাড়ানো হয়েছে। আর ইভটিজিংয়ের মতো
ঘটনা যাতে না ঘটে,
সেজন্য আমাদের বিশেষ টিম কাজ করবে
সাদা পোশাকে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট এলাকার মোবাইল পার্টি স্ট্যান্ডবাই থাকবে গির্জা এলাকায়।’
সাধারণত
খ্রিস্টান বা হিন্দু ধর্মীয়
অনুষ্ঠানে মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্মের লোকজনও আসেন শুভেচ্ছা জানাতে।
তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুবছর ধরে
তা কমেছে। খ্রিস্টানদের বড়দিনের অনুষ্ঠান যেহেতু গির্জায় হয়, তাই করোনা
প্রতিরোধ সংক্রান্ত সরকারি স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা কঠোরভাবে পরিপালন করা হবে।
ডিএমপির
অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা শাখা) একেএম
হাফিজ আক্তার বলেন, ‘গির্জা এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারে ইতোমধ্যে আমাদের গোয়েন্দা শাখার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ
যাতে নাশকতার চেষ্টা করতে না পারে,
সেজন্য ডিবি, সিটিটিসির সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় নিয়োজিত রয়েছেন। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া পেট্রোলিং বাড়ানো হয়েছে।’
তিনি
বলেন, ’বড়দিনের নিরাপত্তা ব্রিফিং ও নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট
এলাকা ও নিয়োজিত কর্মকর্তাদের
জানানো হয়েছে। গির্জা ও আশপাশের এলাকায়
সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তি বা
বস্তু পরিলক্ষিত হলে তাৎক্ষণিক নিকটস্থ
পুলিশকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।’
তিনি
আরও বলেন, ’প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর
মাধ্যমে এসব বিষয়ে জানাতে
বলা হয়েছে। গির্জা এলাকায় থাকবে ফায়ার টেন্ডার ও অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা।’
এ ছাড়া বড়দিনের অনুষ্ঠানে আগত দর্শনার্থীদের পকেটমার, ছিনতাইকারী, অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টি সম্পর্কে সতর্ক হয়ে চলাচলের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি।
এআরআই/ডা