প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২১, ০৬:১৬ পিএম
জমি
নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৬
মে রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা
করা হয় সাহিনুদ্দিন নামে
এক যুবককে। এ দিকে এই
হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে
লক্ষ্মীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও
বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব এম এ আউয়ালকে
গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়া দুইজন
ইতোমধ্যে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।
তবে
সাহিনুদ্দিনকে এর আগেও কয়েক
দফা হত্যার চেষ্টা করা হয়। এ
দফায় হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে কৌশলে ত্রিমুখী
বিরোধের মুখে ফেলা হয়
সাহিনুদ্দিনকে। সমঝোতায় আসতে চাইলেও বিরোধীপক্ষ
সাবেক সেনা কর্মকর্তা মোস্তফা
কামালের পক্ষ নেয়ায় এবং
ক্যাডার সুমনের সঙ্গে বৈরিতায় সাহিনুদ্দিনকে বিশ্বাস করতে পারেনি আউয়াল পক্ষ। পাল্টাপাল্টি চার মামলায় জেল
খেটে বেরিয়ে সপ্তাহ না যেতেই খুন
হন তিনি।
তদন্ত
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকার কলাবাগানে সুলতানা টাওয়ারের তৃতীয় তলায় আউয়ালের অফিসে
বসেই সাহিনুদ্দিন খুনের পরিকল্পনা করা হয়।
ঢাকা
মেট্রোপলিটন পুলিশের মিরপুর গোয়েন্দা বিভাগ সূত্র জানায়, সাহিনুদ্দিন খুনের ঘটনায় রোববার (২৩ মে) পর্যন্ত
সাবেক এমপি আউয়ালসহ গ্রেফতার
হয়েছে ১০ জন। তাদের
মধ্যে তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। শনিবার ডিবির অভিযানে গ্রেফতার ৩ আসামি শরীফ,
টিটো ও ইকবালকে রোববার
চার দিন করে রিমান্ডের
আদেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর হাকিম
ধীমান চন্দ্র মণ্ডলের আদালত। এ ছাড়া আউয়ালসহ
৭ গ্রেফতার আসামির ডিবি পুলিশের হেফাজতে
জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানা
গেছে।
এ
বিষয়ে ডিএমপির গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ জানান,
সাহিনুদ্দিন হত্যা যে পরিকল্পিত গ্রেফতার
হওয়ারা জিজ্ঞাসাবাদে তা স্বীকার করেছেন।
তিনজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক
জবানবন্দিও দিয়েছেন।
তিনি
আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে পল্লবীতে অবৈধ
ব্যাটারিচালিত রিকশা, ঝুটের নিয়ন্ত্রণ, জমি দখল বাণিজ্যে
জড়িত একটি বড় চক্র।
এই চক্রকে পেছন থেকে স্থানীয়
এক কাউন্সিলর সহায়তা করেন বলেও সন্দেহ
করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
নিহত
সাহিনুদ্দিনের পরিবারের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরে
হ্যাভেলি কোম্পানির সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছিল। একাধিকবার মামলা-হামলা চালিয়েও সাহিনুদ্দিনকে বাগে আনতে না
পেরে সম্পর্ক ও যোগাযোগ বাড়ায়
আউয়ালের লোকজন। তবে হ্যাভেলির সঙ্গে
সমঝোতা করলেও জমির দখল না
ছাড়ায় খুন করা হয়
সাহিনুদ্দিনকে।
সাহিনুদ্দিন
হত্যায় পরিকল্পনাকারী আউয়াল হলেও এতে সরাসরি
কাজ করেছেন ক্যাডার সুমন। নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছেন স্থানীয় ওই ওয়ার্ড কাউন্সিলর।
একই চক্রে স্থানীয় বিহারি আড্ডু সোহাগ ও মাসুদ নামে
আরও তিনজন জড়িত।
তদন্ত
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন,
সাহিনুদ্দিন খুন ও সাবেক
এমপি এম এ আউয়ালের
অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত আরও অনেকের
নাম এসেছে। স্থানীয় কমিশনার, বিহারী নেতাসহ রাজনীতিক, ক্যাডার বাহিনীর দৌরাত্ম্যে সরকারি-ব্যক্তি মালিকানার জমি দখলের মহোৎসব
চলছিল। পল্লবী বুড়িরটেক এলাকার জমি দখলে বাধা
ছিল সাহিনুদ্দিন। এ জন্য তাকে
পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।
উল্লেখ্য,
গত ১৬ মে বিকেলে
মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের
৩১ নম্বর সড়কে সাহিনুদ্দিনকে প্রকাশ্যে
কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই
ঘটনায় তার মা আকলিমা
বেগম ২০ জনকে আসামি
করে পল্লবী থানায় মামলা করেন।
বিআর/
এম. জামান