• ঢাকা শনিবার
    ০৯ নভেম্বর, ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১

ডা. মুরাদকে নিয়ে যা বললেন সেই উপস্থাপক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২১, ১১:৫৭ পিএম

ডা. মুরাদকে নিয়ে যা বললেন সেই উপস্থাপক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

এই মুহূর্তে টক অব দ্য কান্ট্রিতথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে অশ্লীল কথোপকথনের কল রেকর্ড ফাঁস, রাষ্ট্রধর্ম, বর্ণবাদ ও খালেদা জিয়ার নাতনীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের জেরে এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন তিনি।

পদত্যাগেও থামছে না ডা. মুরাদ হাসানের সমালোচনা। সমালোচনা হচ্ছে সেই বিতর্কিত লাইভ উপস্থাপককে নিয়েও। গত ১ ডিসেম্বর নাহিদরেইন্স (নাহিদ হেলাল) নামে এক ইউটিউবারের লাইভে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাতনী ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন ডা. মুরাদ। এরপর থেকেই সে ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয় তাকে নিয়ে।

নেটিজেনদের এক অংশের বক্তব্য সেই উপস্থাপকই ডা. মুরাদকে উত্তেজিত করে জাইমা রহমানকে নিয়ে ওইসব বিতর্কিত মন্তব্য করান। অবশেষে এ ঘটনায় মুখ খুলেছেন নাহিদরেইন্স। ৬ ডিসেম্বর রাতে নিজের ফেসবুক পেজে এক ভিডিওবার্তা বিষয়টির ব্যাখ্যা দেন তিনি।

ডা. মুরাদ হাসানের সেই লাইভের উপস্থাপক নাহিদরেইন্স বলেন, ‘আমার লাইভ সেশনে উনি (ডা. মুরাদ হাসান) কিছু উক্তি করেছেন। যেগুলো ব্যাসিকালি উনার নিজস্ব মতামত। এবং আমি সত্যিই মনে করি এগুলো খুবই লজ্জাজনক ছিল, খুবই অপমানজনক ছিল, বিশেষ করে আমাদের নারী সামাজের জন্য। যা ছিল খুবই খারাপ এবং আমি তা সমর্থন করি না।

নাহিদরেইন্সের ভাষ্য- ‘সেই লাইভে আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম বিএনপির পরবর্তী নেতৃত্ব নিয়ে আপনার কোনো কমেন্ট আছে কি না। তার উত্তরে উনি হঠাৎ করে জাফরউল্লাহ সাহেবকে নিয়ে উনার ভাষণ দেয়া শুরু করেছিলেন। এরপর জাইমাকে নিয়ে অনেক আজেবাজে কথা বলেছেন। যা ছিল খুবই খারাপ। যা আমি কখনও সমর্থন করি না। আমি তা আশাও করিনি।

তিনি বলেন, ‘তবে আমি জানতাম তার ওই স্টেটমেন্টের কারণে বড় একটা ইস্যু তৈরি হবে। কিন্তু আমি তার সেই ভিডিওটি ফেসবুক থেকে ডিলিট করে দেইনি। কারণ উনি যদি খারাপ কিছু বলে থাকেন তার রেসপন্সিবিলিটি তাকেই নিতে হবে। তবে সবার রিয়ালাইজেশন দেখে আমার মনে হচ্ছে এ নিয়ে উনাকে একটা স্যরিও বলতে হবে এবং উনার একটা স্যরি বলা উচিত।

বিতর্কিত সেই লাইভের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে দিয়ে স্যরি বলানোর জন্য আরেকটি লাইভের আয়োজন করেন জানিয়ে এই উপস্থাপক বলেন, ‘ওই লাইভের পর সরি বলানোর জন্য ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে নিয়ে লাইভের আয়োজন করি। এরপর গতকাল (৫ ডিসেম্বর) রাতে উনাকে আবারও লাইভে আনা হয়। তার আগে আধা ঘণ্টা তাকে বোঝানো হয়। তারপরও উনি স্যরি বলেননি। একপর্যায়ে লাইভের মধ্যে আমি নিজেই স্যরি বলি। এরপরের লাইভটিও ভালো ছিল না। ফলে আমি সেটি ডিলিট করে দিয়েছি। এ বিষয়টায় আমি খুশি হতে পারিনি।

নাহিদরেইন্স বলেন, ‘আমি চেষ্টা করেছি উনি ভালো কিছু বলুক। কিন্তু আমি তাতে ফেল করেছি। এ ধরনের অনলাইন শোতে এমন কেউ থাকলে তাদের কন্ট্রোল করা খুবই কঠিন। এমন মন্ত্রীকে চাইলেই কথার মধ্যে থামানো যায় না। এবং আমি সেটা করতে পারিনি। কিন্তু শিষ্টাচার সব জায়গায় থাকতে হবে। আমি ব্যর্থ হয়েছি। উনি প্রমিজ করেছিলেন স্যরি বলবেন। কিন্তু বলেননি।

উল্লেখ্য, কয়েকদিন ধরে নানান বিষয় নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে আসছিলেন ডা. মুরাদ হাসান। জাইমা রহমানকে নিয়ে করা মন্তব্যের পরই নায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে তার আপত্তিকর কল রেকর্ডটি ফাঁস হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল (৬ ডিসেম্বর) তাকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরেই নিজ দফতরে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তিনি।

জেডআই/এম. জামান

আর্কাইভ