প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২১, ০৪:২০ এএম
প্রধান নির্বাচন কমিশনার
(সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন,
নির্বাচনকে ঘিরে কয়েকটি স্থানে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তার কোনোটাই
প্রত্যাশিত ও কাম্য নয়। সোমবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন
কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ
সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
গত দুই ধাপের ইউপি নির্বাচনের সার্বিক
পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে কয়েকটি স্থানে যে হতাহতের
ঘটনা ঘটেছে। তার কোনোটাই প্রত্যাশিত ও কাম্য নয়। ঘটনাগুলোর ওপর বিশ্লেষণমূলক
প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, এর পেছনে ছিল নির্বাচনকে সামনে রেখে আধিপত্য
বিস্তার, বংশীয়
প্রভাব, ব্যক্তিগত
শত্রুতা, রাজনৈতিক
কোন্দল ইত্যাদি।
রোববার (১৪ নভেম্বর) জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার
মাহবুব তালুকদার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন এখন আইসিইউতে থাকার মতো
অবস্থায়। আর এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে গণতন্ত্র লাইফ সাপোর্টে রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কেএম নূরুল হুদা বলেন, কমিশনের প্রত্যেক সদস্যের উচিত
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সহযোগিতা করা। কিন্তু সেই জায়গায় বসে এমন সব মন্তব্য কাম্য
নয়। তাছাড়া তিনি এমন সব কথা মাঝে-মধ্যে বলেই থাকেন। তার অনুপস্থিতিতে সে বিষয়ে কথা
বলতে চাই না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন
কমিশনার বলেন, নির্বাচনকে
কেন্দ্র করে একটি মৃত্যুও স্বাভাবিক নয়। ইতোমধ্যেই আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে
চিঠি দিয়ে বলেছি, নির্বাচনী
এলাকায় যারা দেশি অস্ত্র নিয়ে সহিংসতা করে, তাদের রোধ করতে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করতে
হবে।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে ১০০ ভাগ পাওয়ার
প্রয়োগ করতে পারছি। কিন্তু যারা মারামারি করছে সেটা আসলে তাদের বিষয়। তবে আমরা
পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছি,
কেউ যদি নির্বাচনের সময় কোনো সহিংসতা করে, তাহলে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে।
সিইসি বলেন, ২০২১ সালে দেশব্যাপী ইউনিয়ন পরিষদ সাধারণ
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর ৩৬৯টি এবং
১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের ৮৩৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তৃতীয়
ধাপে ২৮ নভেম্বর ২ হাজার সাতটি এবং চতুর্থ ধাপে ২৩ ডিসেম্বর ৮৪০টি ইউপিতে নির্বাচন
অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া শিগগির পঞ্চম ধাপে আরও প্রায় ১ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এবছরের মধ্যেই মেয়াদ উত্তীর্ণ সব ইউনিয়ন পরিষদের
নির্বাচন অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৮
হাজার ৪৭২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন পদে প্রার্থী ছিল ৪১
হাজার ২১৮ জন। মোট ১৭টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এবং ব্যাপক সংখ্যক স্বতন্ত্র
প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। চেয়ারম্যান পদের বিপরীতে ৩ হাজার ৩১০ প্রার্থী, সাধারণ সদস্য পদের বিপরীতে ২৮ হাজার
৭৪৭ এবং সংরক্ষিত আসনে সদস্য পদের বিপরীতে ১ হাজার ১৬১ জন প্রার্থী
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে গড় ভোট পড়েছে ৭৪ দশমিক ২২ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল
(অব.) শাহাদাত হোসেন, ইসি
সচিব মো হুমায়ুন কবীর খোন্দকার,
ইসির যুগ্ম-সচিব ও পরিচালক এম এম আসাদুজ্জামান। তবে নির্বাচন কমিশনার
মাহবুব তালুকদার অনুপস্থিত ছিলেন।
জেডআই/ডাকুয়া