প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২১, ০২:৪৮ এএম
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেছেন, পছন্দের প্রার্থীদের বিজয়ের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে অতি আবেগের কারণে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) দ্বিতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচন শেষে ইসি ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ভোটকেন্দ্রের বাইরের সংঘর্ষ ঘটলে সেটি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারের বাইরে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, গণমাধ্যমের তথ্য থেকে ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মোট ৮৪ জন মানুষ মারা গেছেন। দ্বিতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচনে ছয়জন মানুষ মারা গেছেন, সেটি নিঃসন্দেহে কমিশনের জন্য দুঃখজনক। আমরা মনে করি এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ম্যাজিস্ট্রেট, রিটার্নিং অফিসার এবং নির্বাচনী কর্মকর্তা সবাই অত্যন্ত একটিভ ছিলেন এবং তারা চেষ্টা করেছেন ভালো কাজ করার জন্য সেই কারণে ভোটটি সুষ্ঠু হয়েছে।
হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, একটি কথা মনে রাখতে হবে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কিন্তু ঘরে ঘরে প্রতিযোগিতা হয়, পাড়ায় পাড়ায় প্রতিযোগিতা হয়। আপনারা দেখবেন একটি পাড়া আরেকটি পাড়ার ওপর প্রভাব বিস্তার করতে চায়। এই প্রভাব বিস্তার করার একটি প্রতিযোগিতা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে থাকে। প্রার্থী যারা তারা কিন্তু অতি আবেগি হয়ে যায় বিজয়ের জন্য। এসব কারণেই কিন্তু এই নির্বাচনে সহিংসতা হয়। তারপরও বলব, যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তার জন্য নির্বাচন কমিশন মনে করে এই ঘটনাগুলো না ঘটলে আরও ভালো হতো। আমরা মনে করি, নেক্সট টাইম আরও ভালো ভোট হবে।
কত শতাংশ ভোট পড়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,
কত শতাংশ ভোট পড়েছে সেটি এই মুহূর্তে বলা কঠিন, যেহেতু
ভোট কাউন্ট হচ্ছে। আমরা এ পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছি তাতে ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ ভোট কাস্ট
হয়েছে।
সামনের ধাপের নির্বাচনে হতাহত কমাতে নতুন কোনো চিন্তা করবেন কি না জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, আজ যে ভোট হয়েছে এটি বসে এনালাইসিস করব। এনালাইসিস করে দেখব আর কোন কোন জায়গায় বেশি আমাদের জোর দিতে হবে, যাতে ভোট আরও ভালো হয়।
হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, আজ যে ছয়জন মারা গেছেন কেউ ভোটকেন্দ্রে মারা যাননি। প্রার্থীদের মধ্যেই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, তাদের মধ্যেই সংঘর্ষের কারণে মারা গেছেন। মোট যে ৮৩৪টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হয়েছে আমরা সব জেলায় খবর নিয়েছি, প্রার্থীরাও কেউ কেউ আমাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন, আমরা জানতে পেরেছি- ভোটটি খুব সুন্দর হয়েছে, উৎসবমুখর হয়েছে। ৮ হাজার ৪০০ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০টিতে ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছে। আমাদের প্রিসাইডিং অফিসাররা ওই ১০ কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দিয়েছেন। এগুলোতে পরে ভোটগ্রহণ করা হবে। অন্য কেন্দ্রগুলো নিয়ে যদি রেজাল্ট না হয় তখন ডিসিশন নিয়ে ভোট নেয়া হবে।
বুধবার (১০ নভেম্বর) চতুর্থ ধাপের ভোটের তফসিল হয়েছে, পরবর্তী ধাপের ভোট নিয়ে আবার কমিশনের বৈঠক হবে বলেও জানান ইসি সচিব।
এর আগে আজ দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনী সহিংসতায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক।
নিহতদের মধ্যে নরসিংদীতে তিনজন, কক্সবাজারে একজন, চট্টগ্রামে একজন ও কুমিল্লায় একজন। সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়।
জেডআই/এম. জামান