নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় এক গৃহবধূর অভিযোগের ভিত্তিতে একজন ভুয়া দন্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। তার নাম দেলোয়ার হোসেন। বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত ফেসবুক পেইজে অভিযোগ পেয়ে এলাকায় প্রভাবশালী ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় পুলিশ।
বুধবার দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, দাঁতের সমস্যার কারণে দক্ষিণখান এলাকার একজন গৃহবধূ স্থানীয় হাজী সিদ্দিক মার্কেটে মীর ডেন্ট নামক একটি দন্ত চেম্বারে যান। দামী আসবাবপত্র ও সুন্দর ডেকোরেশনে সাজানো চেম্বারটি। কয়েকবার এ ডাক্তারকে দাঁতও দেখিয়েছেন। হাজার হাজার টাকা খরচ করেছেন। কিন্তু চিকিৎসায় তার খটকা লাগে। তার মনে হচ্ছিল তিনি সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তাই তিনি অন্য একজন ডাক্তারের কাছে যান। ওই ডাক্তার আগের ডাক্তারের চিকিৎসা সঠিক নয় এবং সন্দেহজনক বলে জানান।
রোগী তার স্বামীকে জানালে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পরামর্শ দেন। কেননা, সেই ডাক্তার ও তার পরিবার এলাকায় প্রভাবশালী। এখানে তাদের বাড়ি, সম্পত্তি ও অনেক আত্মীয়-স্বজন রয়েছে। তাদের সাথে ঝামেলায় গিয়ে এলাকায় টিকে থাকতে পারবেন না। কিন্তু স্ত্রী বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না।
পরে বিষয়টি জানিয়ে গত ১১ মে ওই গৃহবধূ বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত বাংলাদেশ পুলিশ ফেইসবুক পেইজের ইনবক্সে বার্তা পাঠান। তিনি অনুরোধ করেন যেনো ওই ডাক্তারের বিষয়টি একটু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে তিনি কোনোভাবেই থানায় অভিযোগ বা মামলা করতে অস্বীকার করেন।
বার্তাটি দক্ষিণখান থানার ওসি সিকদার মো. শামীম হোসেনকে পাঠিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয় মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং। পাশাপাশি দক্ষিণখান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার গোস্বামীকে পরামর্শ দেন বিষয়টি সুপারভাইজ করতে। এর প্রেক্ষিতে দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) মো. আফতাব উদ্দন শেখের নেতৃত্বে এসআই মোশাররফ হোসেনসহ পুলিশের একটি টিম সাদা পোশাকে বিষয়টি তদন্তে নামে।
তদন্তে তারা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হন অভিযুক্ত ডাক্তারি পাস করা কোনো চিকিৎসক নন। দাঁতের ডাক্তার হিসেবে তার কোনো প্রোফেশনাল সার্টিফিকেটও নেই। তিনি এভাবে দীর্ঘদিন ধরে নিরীহ রোগীদের সাথে প্রতারণা করছিলেন। ওই ডাক্তারের দাবী, তিনি তার ডাক্তার বন্ধুদেরকে চিকিৎসায় সহায়তা করে থাকেন মাত্র। কিন্তু সরেজমিনে পুলিশ দেখতে পেয়েছে, অনুমোদিত ডাক্তার না হয়েও তিনি দাঁতের চিকিৎসা করছেন। চেম্বারটি তাৎক্ষনিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে উপযুক্ত আইনী ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
লাইজুল/ ১২ মে
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন