• ঢাকা মঙ্গলবার
    ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

নওয়াব ফয়জুন্নেসার মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১, ০৫:০৮ পিএম

নওয়াব ফয়জুন্নেসার মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

কুমিল্লার লাকসামের নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী নারী জাগরণ ও নারী শিক্ষার অন্যতম অগ্রদূত। ব্রিটিশ রাজদরবারে যিনি নিজের ব্যক্তিত্ব তুলে ধরেছেন। লড়েছেন দেশের জন্যও। নিজের চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগিয়েছেন মানুষের জন্য, নারীর জন্য। তার জমিদারি কাজে লাগিয়েছেন জনহিতকর কাজে। নারী শিক্ষার প্রসার ও সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম ও একমাত্র মুসলিম নারী হিসেবে ব্রিটেনের মহারানী ভিক্টোরিয়া ‘নওয়াব’ উপাধি দেন তাকে। আজ ২৩ সেপ্টেম্বর তার ১১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী।

১৮৩৪ সালে কুমিল্লার হোমনাবাদ পরগনার (বর্তমানে লাকসাম উপজেলার) পশ্চিমগাঁও গ্রামে নওয়াব ফয়জুন্নেসার জন্ম। আহমেদ আলী চৌধুরী ও আরফুননেছার প্রথম কন্যা তিনি। ১৮৪৪ সালে বাবা ও ১৮৫৫ সালে তার মা মারা যান। এরপর তিনি জমিদারি দেখাশোনা শুরু করেন। ১৯০৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী মৃত্যুবরণ করেন। তাকে তার প্রতিষ্ঠিত ১০ গম্বুজ মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম মহিলা নওয়াব। তিনি সমাজ সংস্কারের অংশ হিসেবে মেয়েদের শিক্ষার প্রতি জোর প্রচেষ্টা চালান। ১৮৭৩ সালে ('বেগম রোকেয়া'র জন্মের সাত বছর পূর্বেই) নারী শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে তিনি মেয়েদের জন্য কুমিল্লায় একটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। উপমহাদেশের বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত মেয়েদের প্রাচীন স্কুলগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।

শিক্ষা বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে তিনি মেয়েদের স্বাস্থ্য রক্ষা ও সুচিকিৎসারও ব্যবস্থা করেন। ১৮৯৩ সালে কুমিল্লা শহরে প্রতিষ্ঠা করেন 'ফয়জুন্নেসা জানানা হাসপাতাল'। ১৮৯৩ সালে নওয়াব বাড়ির কাছেই তিনি মেয়েদের জন্য একটি স্বতন্ত্র হাসপাতাল নির্মাণ করেছিলেন। তিনি ১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অনেকগুলো দাতব্য প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, এতিমখানা এবং সড়ক নির্মাণ করে তার মানবতাবাদী ও সমাজ সংস্কারের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তিনি নওয়াব বাড়ির সদর দরজায় একটি দশ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৯৪ সালে পবিত্র হজ পালন করার সময় তিনি মক্কায় হাজীদের জন্য একটি মুসাফিরখানাও প্রতিষ্ঠা করেন। আমাদের এদেশে তখন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন বিদ্যমান ছিল। নওয়াব ফয়জুন্নেসা সরকারি জনহিতকর কাজেও প্রচুর অর্থ দান করতেন।

২০০৪ সালে ফয়জুন্নেসা চৌধুরানীকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করা হয়। তার নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রীনিবাসের নামকরণ করা হয় নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ছাত্রীনিবাস। তার প্রতিষ্ঠিত নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজকে সরকারীকরণ করা হয়েছে।

শামীম/এম. জামান

আর্কাইভ