টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
ব্রি-৮১, ব্রি- ৮৯ ও ব্রি ৯২ জাতের ধান চাষের মাধ্যমে দেশে নতুন করে সবুজ বিপ্লব ঘটবে। দেশে খাদ্য উৎপাদন অনেকগুণ বাড়বে ও ভবিষ্যতে খাদ্য সংকট হবে না। এই কথাগুলো বলছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি।
শনিবার (৮ মে) দুপুরে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার মুশুদ্দি কামারপাড়ায় 'ব্রি-৮৯ ও ৯২ জাতের ধান কর্তন ও কৃষক সমাবেশ' অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ব্রি) ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
এসময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, খাদ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে বিজ্ঞানীরা নিরলসভাবে কাজ করছে। ব্রি-৮১, ব্রি- ৮৯, ব্রি ৯২, মুজিববর্ষে ব্রি- ১০০সহ অনেকগুলো উন্নত জাতের ধান উদ্ভাবিত হয়েছে। ব্রি-৮১, ব্রি- ৮৯ ও ব্রি ৯২ জাতের ধানের ফলন অনেক বেশি। যা প্রতি বিঘায় ২৫-৩০ মণ, প্রতি শতকে প্রায় ১ মণ। এ জাতগুলো চাষের মাধ্যমে দেশে নতুন করে সবুজ বিপ্লব ঘটবে। দেশে খাদ্য উৎপাদন অনেকগুণ বাড়বে ও ভবিষ্যতে খাদ্য সংকট হবে না।
মন্ত্রী আরও বলেন, ব্রি ৮৯ ও ব্রি- ৯২ চাষের মাধ্যমে উন্নত শস্য বিন্যাসে বোরো ধান ও আমন ধান চাষ করে পতিত সময়ে সরিষা করা যাবে। প্রতিবছর আমাদেরকে বিদেশ থেকে ১৫-২০ হাজার কোটি টাকার বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়। এ জাত দুটি চাষ করলে অতিরিক্ত ফসল হিসাবে সরিষা উৎপাদন করা যাবে। ফলে সরিষার উৎপাদন বাড়বে ও তেল আমদানির পরিমাণ কমবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীর। এতে বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ, বারির মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গণি, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়সহ আরও অনেকে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের তথ্য মতে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে রোপণকৃত ব্রি ধান ৮৯ ও ব্রি ধান ৯২ আজ কাটা হয়। আগে এই এলাকায় ব্রি ধান ২৮ এবং ব্রি ধান ২৯ আবাদ করা হতো। যেখানে ব্রি ধান ২৮ ও ব্রি ধান ২৯ এর ফলন ছিল বিঘাপ্রতি ১৮ থেকে ২০ মন, সেখানে ব্রি ধান ৮৯ ও ব্রি ধান ৯২ ধানের ফলন পাওয়া যায় বিঘাপ্রতি ২৫-৩০ মন। এছাড়াও, ব্রি ধান ২৯ এর চেয়ে পাঁচ থেকে সাত দিন পূর্বেই কর্তন করা যায় এই দুটি জাত।
‘ভোজ্যতেলের জন্য বোরো-পতিত-রোপা আমন শস্যবিন্যাসে সরিষা অর্ন্তভূক্তি করতে পারলে ২.৬০ মিলিয়ন টন সরিষা উৎপাদন সম্ভব, যা থেকে বছরে ১.০৪ মিলিয়ন টন সরিষা তৈল পাওয়া যেতে পারে।’
টিআর/এম. জামান
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন