প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১, ১২:১৬ পিএম
গঙ্গা নদীতে ঢুকছে না ইলিশ। হাহাকার
ছড়িয়ে পড়েছে বঙ্গোপসাগরের মোহনায়। হতাশ হয়ে পড়েছেন
ভারতীয় জেলেরা। সমুদ্র উজিয়ে গঙ্গা-মোহনার কাছাকাছি এসেই ঠিকানা বদলে
তারা পাড়ি দিচ্ছে বাংলাদেশের
পদ্মা নদীতে। এমনটা গত কয়েক বছর
ধরেই চলছে। জেলেদের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার
জানায়, গঙ্গা কিংবা তার শাখা-প্রশাখার
মোহনা থেকে মুখ ফিরিয়ে
নিয়েছে ইলিশ।
প্রতিবেদনে
বলা হয়, বাংলাদেশ বা
মিয়ানমারের ইরাবতী নদীতে ইলিশের আনাগোনা নতুন নয়। তবে
গঙ্গাবিমুখ ইলিশের ঝাঁকে খুলনা, পটুয়াখালী কিংবা মিয়ানমারের সিতুয়ে মোহনায় এখন ‘জাল ফেললেই
ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে।
বাংলাদেশের
মৎস্য অধিদফতরের পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার
জানায়, গত দুবছরের তুলনায়
প্রায় ১৯ শতাংশ বেশি
ইলিশ ধরা পড়েছে। সাউথ
এশিয়া নেটওয়ার্ক অব ড্যাম রিভার
অ্যান্ড পিপল (এসএএনডিআরপি) তাদের রিপোর্ট বলছে, গঙ্গা থেকে অচিরেই ‘ডোডো
পাখি’
হয়ে যেতে বসেছে ইলিশ।
আধা
সরকারি ওই সংস্থার মৎস্য
বিশেষজ্ঞ নীলেশ শেট্টি বলছেন, বড্ড বেশি অবহেলা
করা হয়েছে গঙ্গাকে। পশ্চিমবঙ্গে গঙ্গার পাড় বরাবর একশরও
বেশি পৌরসভার যাবতীয় আবর্জনা এবং নদীর বরাবর
গড়ে ওঠা কলকারখানার বর্জ্যে
গঙ্গা-দূষণ মাত্রা ধরাছোঁয়ার
বাইরে চলে গেছে। নোনা
জলের ঘেরাটোপ থেকে তার ডিম
সংরক্ষণে ইলিশের প্রয়োজন হয় কিঞ্চিৎ মিষ্টি
জলের। নদীর কাছে সে
জন্যই ফিরে আসে তারা।
কিন্তু দূষণের ধাক্কায় গঙ্গার লবণের মাত্রা (স্যালিনিটি) অত্যধিক বেড়ে গিয়েছে।
বাংলাদেশের
মৎস্য অধিদফতরের সাবেক কর্মকর্তা আব্দুর শহিদুল্লাহ জানিয়েছেন, পদ্মা কিংবা শাখা নদীর লাগোয়া
এলাকায় ভারী শিল্প তেমন
নেই। ফলে দূষণে বাংলাদেশের
মোহনা এখনও ইলিশের কাছে
ব্রাত্য হয়ে ওঠেনি। পানিতে
মিষ্টতাও হারায়নি।
এসএএনডিআরপির
সদ্য পেশ করা রিপোর্ট
বলছে, গভীর সমুদ্র থেকে
গঙ্গা মোহনার দিকে যাত্রা করেও
শেষ মুহূর্তে মুখ ফেরাচ্ছে ইলিশ।
গত দুবছর ধরে এই প্রবণতা
ছিল। এ মৌসুমে গঙ্গাবিমুখ
ইলিশের অভিমুখ—খুলনা, চট্টগ্রাম, ভোলা, পটুয়াখালীর মোহনা। কখনো বা মিয়ানমারের
সিতুয়ে।
বাংলাদেশের
মৎস্য অধিদফতরের খবর, চলতি মৌসুমে
ওই সব মোহনায় প্রায়
৫৯ লাখ টন ইলিশ
উঠেছে। আর ভারতের মৎস্যজীবী
সংগঠন ‘ইউনাইটেড ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশন’ জানিয়েছে,
গঙ্গায় ইলিশের আনাগোনা প্রায় শূন্য।
সবুজ/এএমকে