প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১, ০৬:০৩ পিএম
শকুন সংরক্ষণে সরকার
ব্যক্তি-সংস্থাকে স্বীকৃতি ও আর্থিক সহায়তা
দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু
পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
এ ছাড়া শকুন সংরক্ষণের
জন্য সারা বিশ্বের কাছে
বাংলাদেশ উদাহরণ এবং মাইলফলক হয়ে
থাকবে বলেও জানান তিনি।
শনিবার
(৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস
উপলক্ষে আয়োজিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী
বলেন, ‘আজ শুধু শকুন
নয়, আমরা অনেক প্রাণী
হারাতে বসেছি। আমরা দেখেছি, একটি
গরু মারা গেলে শত
শত শকুন সেটাকে ভক্ষণ
করত। সেই শকুন আজ
শূন্য হয়ে গেছে। ডাইক্লোফেনাক
ও কিটোপ্রফেন নামের ব্যথানাশক ওষুধের কারণে শকুন মারা গেছে।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ওষুধ
ছাড়াও আরও অনেক কারণ
থাকতে পারে; যেমন বাসস্থল নেই।
শকুন বসার মতো বড়
ও উঁচু গাছ কমে
গেছে।’
তিনি
আরও বলেন, ‘আমরা শকুনের আবাসস্থল
করেছি। সুন্দরবন ও রেমা-কালেঙ্গায়
বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হয়েছে। বন বিভাগকে শকুনের
আবাসস্থল রক্ষা করতে হবে। পরিবেশ
সংরক্ষণে শকুনের বিকল্প নেই।’
‘প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে
নিবেদিত ব্যক্তি, বিজ্ঞানীদের শকুন রক্ষার জন্য
নিজ নিজ অবস্থান থেকে
একনিষ্ঠভাবে দায়িত্বপালন করতে হবে। সরকার
শকুন সংরক্ষণকারী ব্যক্তি ও সংস্থাকে স্বীকৃতি
ও প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে’-
বলেন মন্ত্রী।
শকুন
সংরক্ষণের জন্য সারা বিশ্বের
কাছে বাংলাদেশ উদাহরণ এবং মাইলফলক হয়ে
থাকবে। বহুমুখী পদক্ষেপের ফলে মোট শকুনের
৫৭ ভাগ সংরক্ষণের করা
গেছে। এখন সবচেয়ে বেশি
মনোযোগ দিতে হবে শকুনের
জন্য নিরাপদ খাদ্যের ব্যবস্থা করা এবং প্রতি
দুই বছর পর পর
জরিপ করে শকুনের সংখ্যা
ও আবাসস্থল পরীক্ষা করা।
শকুন
সংরক্ষণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে মন্ত্রী
বলেন, ‘শকুন রক্ষায় বিশ্বব্যাপী
একটি উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছে। অন্যান্য ক্ষতিকর ওষুধ যেমন ফ্লুনিক্সিন,
এসিক্লোফেনাক যেন দেশের বাজারে
না আসে, সে ব্যাপারেও
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নির্দেশনা দিয়েছে। শকুনের জন্য নিরাপদ ওষুধ
মেলোক্সিক্যাম রোগাক্রান্ত পশুদের জন্য ব্যবহারের পরামর্শ
দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় শকুন সংরক্ষণ কমিটি
গঠন করা হয়েছে।’
পরিবেশ,
বন ও জলবায়ু পরিবর্তন
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা
কামাল বলেন, ‘মানুষ হিসেবে খাদ্য ও বাসস্থান বাদ
দিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন। শকুন
কী খাচ্ছে, সে বিষয়ে গবেষণা
দরকার। গবেষণা সংখ্যা দিয়ে না বলে,
উদ্দেশ্য দিয়ে বলতে চাই,
শকুন কী খাচ্ছে সে
গবেষণাটা করা দরকার। খাবারের
ব্যাপারটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে চাই। বলা হচ্ছে,
শকুন শিকার করে খায় না,
রেডি করা খাবার খায়।
আমরা তার খাবারটা রেডি
রাখছি কি না। আমরা
একটা প্রাণী ধংসের কারণ নই তো।’
বাংলাদেশ
বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও পাখি বিশেষজ্ঞ
ইনাম আল হক বলেন,
‘ওষুধ নিষিদ্ধ করার পর কোম্পানিগুলো
ক্ষতির মুখে পড়ে। এরপরও
তারা শকুন রক্ষায় এগিয়ে
এসেছে, একই সঙ্গে কাজ
করছে।’
মানুষের
খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের কারণে শকুন হারিয়ে যাচ্ছে
দাবি করে বিবিসিএফ সভাপতি
এস এম ইকবাল বলেন,
‘আমরা নিজের পকেটের টাকা খরচ করে
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজ করি। সরকার
আমাদের সহযোগিতা করতে পারে।’
টিআর/এম. জামান