প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২১, ০৩:৪৪ পিএম
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে চোরাই গাড়ি চক্রের একটি দলকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তারা জানিয়েছে গাড়ি চুরির পর তা কীভাবে অপরাধমূলক কাজেও লাগানো হয়।
শুক্রবার
(২৭ আগস্ট) রাতে গ্রেফতারকৃত পাঁচজন
হলেন- আজিম উদ্দিন (৩৮),
রফিক উল্লাহ (২৬), মো. সেলিম
(৫০), কামরুল হাসান (২৬) ও ওমর
ফারুক (২৫)। তাদের
কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া
তিনটি পিকআপভ্যান, একটি সিএনজি অটোরিকশা
উদ্ধার করা হয়েছে। এ
ছাড়া তাদের কাছে একটি পিস্তল,
১ রাউন্ড গুলি, তিনটি ছোরা, একটি চাইনিজ কুড়ালও
পাওয়া যায় বলে র্যাব জানিয়েছে।
শনিবার
(২৮ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া
সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব জানায় র্যাব। সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন
ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন খান
জানান, গত ১১ আগস্ট
রাজধানীর দারুস সালাম এলাকা থেকে গাড়ি ছিনতাই
চক্রের পাঁচজন সদস্যকে গ্রেফতারের পর এই চক্রের
সন্ধানে অনুসন্ধান শুরু করেন তারা।
তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার
করা হয়।
খন্দকার
আল মঈন খান বলেন,
‘এই সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাইকারী চক্রে
১৫ থেকে ২০ জন
জড়িত। এই চক্রের হোতা
আজিম উদ্দিন।’
প্রাথমিক
জিজ্ঞাসাবাদে তারা গত ৫-৬ বছর দেশের
বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শতাধিক গাড়ি
ছিনতাই কিংবা চুরির কথা স্বীকার করেছে
বলে র্যাব জানায়।
এই
চক্রটি মূলত ঢাকা-চট্টগ্রাম
রুটসহ নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও গাজীপুরের আশপাশের
এলাকায় সক্রিয়। এই চক্রের সদস্যদের
নামে ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কুমিল্লা ও গাজীপুরের বিভিন্ন
থানায় বেশ কয়েকটি মামলা
রয়েছে।
যে
কৌশলে চুরি-ছিনতাই
চক্রটি
কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে
গাড়ি ছিনতাই ও চুরি করে
থাকে বলে সংবাদ সম্মেলনে
জানানো হয়।
র্যাব কর্মকর্তারা বলেন,
‘প্রথম দলের সদস্যরা ছদ্মবেশে
গাড়ি সম্পর্কে, চালক-মালিক সম্পর্কে
তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। সেই
তথ্যের ভিত্তিতে দ্বিতীয় দল গাড়ি ছিনতাই
বা চুরি করে।’
ক্ষেত্রবিশেষে
চালকদের প্রলুব্ধ করে ছিনতাই নাটক
সাজানো হয় বলে জানান
র্যাব কর্মকর্তারা। এই
দলে অভিজ্ঞ চালক ও মেকানিকও
থাকে, যাতে গাড়ির লক
খোলা যায়, ছিনতাই বা
চুরি করা গাড়ি দ্রুত
সরিয়ে নেয়া যায়। কিছু
ক্ষেত্রে গাড়ি ভাড়া করে
পথে চালককে চেতনানাশক ওষুধে অচেতন করে তার মোবাইল
ফোন ও গাড়ি চুরি
করে এই চক্র।
তৃতীয়
দল চোরাই গাড়ি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ
বিভিন্ন এলাকায় লুকিয়ে রাখে। এরপর গাড়ির চালকের
মোবাইল থেকে মালিকের সঙ্গে
যোগাযোগ করে টাকা দাবি
করে থাকে। অনেক সময় টাকার
বিনিময়ে মালিক গাড়ি ফিরে পান।
অনেক সময় টাকা দিয়েও
ফেরত পান না।
বদলে
যায় গাড়ি
চোরাই
গাড়ি বিভিন্ন ওয়ার্কশপে পাঠায় চতুর্থ দল। সেখানে গাড়ির
রঙ পরিবর্তন করা হয়। ক্ষেত্রবিশেষে
গাড়ির যন্ত্রাংশ বিচ্ছিন্ন করা হয়ে থাকে;
যা পরবর্তীতে বাজারে বিক্রি করে দেয়া হয়।
র্যাব কর্মকর্তারা বলেন,
‘চোরাই গাড়ির যন্ত্রাংশ এক গাড়িরটা অন্য
গাড়িতে লাগানো হয় এবং ভুয়া
রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট দেয়া হয়, যাতে
ধরা না পড়ে।’
ভুয়া
কাগজপত্র তৈরিতে পঞ্চম দল ভূমিকা রাখে
বলে র্যাব জানিয়েছে।
সংবাদ
সম্মেলনে বলা হয়, সাধারণত
তারা বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম
যুক্ত করে ভুয়া কাগজপত্র
তৈরি করে থাকে। চক্রের
হোতা এ কাজটি করেন।
ওইসব গাড়ি পরে বিক্রি
বা ভাড়া দেয়া হয়ে
থাকে।
খন্দকার
আল মঈন বলেন, ‘কম
মূল্য হওয়ায় এই চোরাই বা
ছিনতাইকৃত গাড়ির চাহিদা রয়েছে। এই যানবাহনসমূহ মাদক
পরিবহনেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।’
জেডআই/এম. জামান