প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২১, ০৪:০১ পিএম
টাকার বিনিময়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে দেয়া হচ্ছে করোনা টিকা। এমন তথ্যের
ভিত্তিতে বুধবার (১৮) আগস্ট রাজধানীর দক্ষিণখানের একটি ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করে
পুলিশ। দরিদ্র পরিবার সেবা সংস্থা নামক ক্লিনিক থেকে উদ্ধার হয় মডার্নার টিকা। আটক
করা হয় ক্লিনিকের মালিক বিজয়কৃষ্ণ তালুকদারকে।
জানা
গেছে, গণটিকাদানের বিশেষ ক্যাম্পেইন থেকে মডার্নার টিকা গায়েব করেছিল বিজয়কৃষ্ণ সিন্ডিকেট।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে টিকা লোপাটের পেছনে আরও কয়েকজন জড়িত আছে বলে স্বীকার করেছেন
বিজয়কৃষ্ণ।
গত
৭ আগস্ট করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ছয় দিনে ৩২ লাখ মানুষকে টিকাদানের আওতায় আনতে দেশজুড়ে
গণটিকাদানের বিশেষ ক্যাম্পেইন শুরু হয়। এর আওতায় রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রে মার্কিন
কোম্পানি মডার্নার তৈরি টিকা দেয়া হচ্ছিল। আর ওই ক্যাম্পেইন পরিচালনা করতে গিয়েই সিন্ডিকেটের
মাধ্যমে উত্তরার একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে দরিদ্র পরিবার সেবা সংস্থা নামে ক্লিনিকের
মালিক বিজয়কৃষ্ণ তালুকদার ও কয়েকজন মিলে মডার্নার কিছু টিকা হাতিয়ে নেন।
এরপর
বিজয়কৃষ্ণ দক্ষিণখানের চালাবন হাজিপাড়া এলাকায় নিজ ক্লিনিকে বিনামূল্যের সেই টিকা ৫০০
থেকে হাজার টাকায় বিক্রি করছিলেন। পরে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ।
পরে
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় দক্ষিণখান থানার এসআই রেজিয়া খাতুন বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিজয়কৃষ্ণসহ
অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর বিজয়কৃষ্ণকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের
রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দক্ষিণখান থানার
এসআই আবদুল আজিজ উপস্থিত না থাকায় আগামী ২৩ আগস্ট রিমান্ডের শুনানির দিন ধার্য করেন
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদের আদালত। এরপর বিজয়কৃষ্ণকে কারাগারে পাঠানোর
আদেশ দেন বিচারক।
প্রাথমিক
জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, মডার্নার টিকায় সাধারণ মানুষের
আস্থা বেশি হওয়ায় এবং দীর্ঘদিন ধরে নিবন্ধন করেও টিকা না পাওয়ায় মানুষ টিকার জন্য অধীর
হয়ে আছেন। যেখানেই টিকার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে, সেখান থেকেই তা নেয়ার চেষ্টা করছেন অনেকেই।
এই সুযোগকেই কাজে লাগিয়েছেন কিছু অসাধু লোক। বিজয়কৃষ্ণ তাদেরই একজন।
স্বাস্থ্য
অধিদফতরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) ব্যবস্থাপক ডা. মওলা বক্স চৌধুরী
বলেন, ‘কীভাবে টিকা দরিদ্র পরিবার সেবা সংস্থায় গেল তা জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
তদন্তের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে। এ ঘটনায় কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে গ্রহণ
করা হবে কঠোর ব্যবস্থা।’
মামলার
তদন্ত কর্মকর্তা দক্ষিণখান থানার এসআই মো. আবদুল আজিজ বলেন, ‘অবৈধভাবে করোনাভাইরাসের
টিকা বিক্রি ও নিজ হেফাজতে রাখার অভিযোগে বিজয়কৃষ্ণ তালুকদারকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে
পাঠানো হয়েছে। সরকারি এই টিকা কী করে বাইরে গেল, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিজয়কে রিমান্ডে পেলে কোথা থেকে তিনি ওই টিকা পেলেন এবং কতজনকে প্রয়োগ করেছেন তা বিস্তারিত
জানা যাবে। এই চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
ডব্লিউএস/সবুজ/এম.
জামান