প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২১, ০৫:০৪ পিএম
বিধিনিষেধ শিথিল করার পর পর্যটন
ও বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে।
তবে পশুপ্রিয়দের জন্য এখনই সুখবর
মিলছে না। কেননা আগের
মতোই বন্ধ থাকছে মিরপুরের
জাতীয় চিড়িয়াখানা। আগে প্রাণীদের নিরাপত্তায়
স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা হবে। তারপর
আগামী মাসের শুরুর দিকে চিড়িয়াখানা দর্শনার্থীদের
জন্য উন্মুক্ত করা হতে পারে
বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অন্য
বিনোদন কেন্দ্র খুললেও চিড়িয়াখানাও যে এখনও বন্ধ
তা অনেকেই জানেন না। ফলে চিড়িয়াখানায়
এসে তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার অনেককেই দূর-দূরান্ত থেকে
পরিবারসহ জাতীয় চিড়িয়াখানায় এসে হতাশ হয়ে
ফিরে যেতে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার
যাত্রাবাড়ী থেকে দুই ছেলেমেয়ে
ও স্ত্রীসহ চিড়িয়াখানায় এসেছিলেন আলী হাসান। চিড়িয়াখানার
গেটে নামার পর তা বন্ধের
সংবাদে তার সন্তানেরা হতাশ
হয়ে পড়ে। হাসান আলী
বলেন, ‘করোনার কারণে অনেক দিন ধরে
সন্তানদের নিয়ে বের হওয়া
হয় না। স্কুল বন্ধ,
সারা দিন ওরা বাসায়
থাকে। বিনোদন কেন্দ্র খোলার সংবাদ শুনে চিড়িয়াখানায় এসেছিলাম।
এখানে এসে দেখি বন্ধ।
এখন বাসায় ফিরে যাওয়া ছাড়া
আর কোনো উপায় নেই।’
গুলশান
থেকে শাহানা তার মেয়ে ও
পরিবারের অন্য সদস্যরা চিড়িয়াখানায়
বেড়াতে এসেছিলেন। চিড়িয়াখানা বন্ধের সংবাদ পেয়ে তাদেরও মন
খারাপ হয়ে যায়। শাহানার
সঙ্গে কথা হলে তিনি
বলেন, ‘অনেকদিন ধরে মেয়েটা চিড়িয়াখানা
দেখতে বায়না ধরেছে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেড়াতে এসে
দেখি বন্ধ। কবে খুলবে তাও
কেউ বলতে পারছে না।’
এ
বিষয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ডা. মো. আব্দুল
লতিফ বলেন, ‘জাতীয় চিড়িয়াখানা অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রের চাইতে আলাদা। এখানে জীবন্ত প্রাণী রয়েছে যাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। একটি আক্রান্ত হলে
তা অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ারও আশঙ্কা থাকে। এ জন্য ঝুঁকি
এড়াতে এখনও দর্শনার্থী প্রবেশ
করতে দেয়া হচ্ছে না।’
সংশ্লিষ্টরা
জানান, প্রাণীদের ঝুঁকি এড়াতে জাতীয় চিড়িয়াখানায় বিশেষ কিছু প্রস্তুতি নেয়া
হচ্ছে। প্রস্তুতি শেষে খোলা হলে
দর্শনার্থীদের প্রবেশের গেটে তিন ফুট
দূরত্বে একটি লাল বৃত্তের
মধ্যে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। সবাইকে
মাস্ক পরে প্রবেশ করে
ভেতরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঘোরাফেরা
করতে হবে।
তারা
আরও জানান, চিড়িয়াখানার বিভিন্ন স্থানে দর্শনার্থীদের জন্য ১২টি স্থানে
হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও পানির ব্যবস্থা
করা হবে। ভেতরে দর্শনার্থীদের
জন্য একমুখী রাস্তা তৈরি করা হবে।
বিধিনিষেধ মানতে সার্বক্ষণিক মাইকিং করে সতর্ক করা
হবে। প্রাণীদের সামনে আরও নিরাপত্তা বাড়ানো
হবে। অনেক স্থানে ময়লা
জমে গেছে, সেগুলো পরিচ্ছন্ন করা হবে। এছাড়া
প্রাণীদের সেডগুলো সংস্কার করা হচ্ছে।
কবে
নাগাদ জাতীয় চিড়িয়াখানা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা
হবে জানতে চাইলে পরিচালক ডা. মো. আব্দুল
লতিফ বলেন, ‘আমাদের এখানে সাধারণ সময়ে প্রতিদিন ১০-১২ হাজার দর্শনাথী
আসেন। ছুটির দিনে ১৫ হাজার
ছাড়িয়ে যায়। প্রস্তুতি নিয়ে
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে
এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমাদের
প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে।’
তিনি
আরও বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে
সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আগামী
মাসের শুরু থেকে দর্শনার্থীদের
জন্য উন্মুক্ত করা হতে পারে।
সিদ্ধান্ত হলে গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট
মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দেয়া
হবে।’
শামীম/এম. জামান