প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪, ১১:৩০ পিএম
অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সোমবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
শফিকুল আলম বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জনগণের ঐক্য, ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা ও রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাকে সুসংহত রাখার জন্য এ ঘোষণাপত্রটি গৃহীত হবে।’
প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হবে। এতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিত, ঐক্যের ভিত্তি ও জনগণের অভিপ্রায় ব্যক্ত হবে।’
সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিছুদিনের মধ্যেই সর্বসম্মতিক্রমে এ ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করা হবে এবং জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান তিনি।
গত রোববার রাজধানীর বাংলামোটরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ জানান, আগামী মঙ্গলবার ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ দেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ওই দিন ৭২-এর ‘মুজিববাদী সংবিধানকে’ কবর দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘দেশের মানুষ, যারা অভ্যুত্থানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, তাদের আশা–আকাঙ্ক্ষা কী ছিল সেগুলো লিখিতভাবে লিপিবদ্ধ থাকা উচিত। যেই দলিল বিগত সিস্টেমকে রিজেক্ট করবে। বিগত যেই সিস্টেমগুলোকে মানুষ গ্রহণ করেনি সেগুলোই ঘোষণাপত্রে তুলে ধরা হবে।’
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ‘চব্বিশের বিপ্লব একাত্তরের মতো বেহাত হতে দিতে চাচ্ছি না। ২৪-এর আন্দোলনে সকল ধর্ম জনগোষ্ঠীর মানুষ রাজপথে নেমেছিল। সেই রাজপথে নামার লড়াই চলমান।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের এ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ৩১ ডিসেম্বরের ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ দেওয়ার যে কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তিনি বলেন, ‘৩১ ডিসেম্বরের ঘোষণার বিষয়টি স্পষ্ট না, এতে সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
এদিকে, ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ ঘিরে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অন্তত দেড় থেকে আড়াই লাখ মানুষ জমায়েত করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সোমবার বিকেলে ডিএমপি হেডকোয়ার্টারে ডিএমপি কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক শেষে সংগঠনটির সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে নতুন স্বপ্ন দেখবে বাংলাদেশ। আগামী বাংলাদেশে যে সরকারই আসবে এই ঘোষণাপত্র সীমারেখা হয়ে কাজ করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।