• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

স্ত্রীকে চুমু দিলে কিংবা ঘনিষ্ঠ হলে কী রোজা ভেঙে যাবে?

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩, ২০২৩, ০২:৫৫ এএম

স্ত্রীকে চুমু দিলে কিংবা ঘনিষ্ঠ হলে কী রোজা ভেঙে যাবে?

লাইফস্টাইল ডেস্ক

রোজা হলো নিয়তের সঙ্গে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকা। যুগে যুগে বিভিন্ন নবি-রাসূলদের জামানায় এ রোজা ফরজ ছিল। উম্মতে মুহাম্মাদির ওপর এরই ধারাবাহিকতায় রোজা ফরজ করা হয়েছে। 

পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন রোজা ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সূরা আল বাকারা, আয়াত : ১৮৩)।

মাকরুহ অর্থ অপছন্দনীয়। যেসব কাজ করলে গুনাহ হয় না; তবে ইসলামে অপছন্দ করা হয়েছে সেগুলোকে মাকরুহ বলে। রোজার ক্ষেত্রেও অনেক কাজ এমন রয়েছে, যেগুলো করলে রোজা ভঙ্গ হবে না। তবে এ ধরনের কাজ করা ঠিক নয়। 

যেমন: বীর্যপাত কিংবা সহবাসের আশংকা থাকাবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন করা। স্ত্রীর ঠোঁটে চুম্বন করা— বীর্যপাত বা সহবাসের আশঙ্কা  থাকুক বা না থাকুক। বিবস্ত্র অবস্থায় স্ত্রীকে আলিঙ্গন করা ইত্যাদি।

রোজা রেখে স্ত্রীকে চুমু খাওয়া বা জড়িয়ে ধরা যাবে। তবে গোসল ফরজ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা থাকলে এমনটি করা মাকরুহ। আর গোসল ফরজ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে রোজা ভেঙে যাবে।

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) রোজা রেখে স্ত্রীকে চুমু খেতেন, স্ত্রীর সঙ্গে আলিঙ্গন করতেন। তিনি ছিলেন যৌনাকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে সক্ষম ব্যক্তি।  (বুখারি: ১৮৪১; মুসলিম: ১১২১) 

রোজা যেহেতু পানাহার ও যৌনতা থেকে সংযমী হওয়ার মাস, তাই এই মাসে দিনের বেলায় রোজাদারদের যৌন উত্তেজক কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত।

হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) বলেন, ‘আমরা নবী (সা.)-এর কাছে বসা ছিলাম। তখন এক যুবক এলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি কি রোজা রেখে চুমু খেতে পারি?’ নবী (সা.) বললেন, ‘না।’ এরপর এক বৃদ্ধ এলেন এবং একই প্রশ্ন করলেন। নবী (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ।’ আমরা তখন অবাক হয়ে একে অপরের দিকে তাকাচ্ছিলাম। নবী (সা.) বললেন, ‘আমি জানি, তোমরা কেন একে অপরের দিকে তাকাচ্ছ। শোনো, বৃদ্ধ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।’ (মুসনাদে আহমদ: ২ / ১৮০ ও ২৫০)

স্ত্রীকে চুমু খাওয়া বা জড়িয়ে ধরার কারণে যদি গোসল ফরজ হয়ে যায়, তবে দিনের বাকি অংশ কিছু না খেয়ে রোজাদারের মতোই কাটাতে হবে। পরে সেই রোজার কাজা করতে হবে। তবে কাফফারা আদায় করতে হবে না। আর যদি শুধু পিচ্ছিল পদার্থ বের হয় তাহলে রোজার ক্ষতি হবে না। 

তেমনই সুবহে সাদিক হয়নি মনে করে স্ত্রী সঙ্গম করল তার পর জানতে পারল যে ওই সময় সুবহে সাদিক হয়ে গিয়েছিল, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা ওয়াজিব হবে।  (রদ্দুল মুহতার ৩/৩৮০)

আর্কাইভ