প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩, ০৩:৪৬ পিএম
অফিসে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত সময় অবস্থান করাকে অনেকেই ক্যারিয়ারের জন্য ইতিবাচক মনে করেন। অনেকে ভাবেন, এমনটা করলে বসের মন পাওয়া যাবে। কিন্তু এই ভাবনার ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় আপনার নজর এড়িয়ে যাচ্ছে, যার ফলে নিজের অজান্তেই ডেকে আনছেন বিপদ!
অফিসে বেশি সময় থাকেন, ডেকে আনছেন যেসব বিপদ
লাইফস্টাইল ডেস্ক
কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত কাজ করলে নানা বিপদ হতে পারে। সম্প্রতি থাইল্যান্ডে অতিরিক্ত সময় কাজ করতে গিয়ে হার্ট অ্যার্টাকে এক যুবকের মৃত্যু হয়। তাছাড়া এর ফলে দেখা দিতে পারে নানা শারীরিক সমস্যা।
ঘুমের সমস্যা
বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, একমাত্র ঘুমের মধ্যেই মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলো আবার পুনরুজ্জীবিত হতে পারে। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন গড়ে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। কিন্তু কাজের প্রয়োজনে ঘুমাতে যাওয়া বা ঘুম থেকে ওঠার স্বাভাবিক চক্রটি বিঘ্নিত হলে সেটির গুরুতর প্রভাব পড়ে শরীরের ওপর। আর এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, অফিসের অতিরিক্ত কাজের প্রেশার এবং অফিসের পরিবেশে বেশি সময় অবস্থান করা ঘুমের বিঘ্ন ঘটায়।
ঘাড় ও কোমরের সমস্যা
অফিসে সাধারণত ৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় বসে কাজ করলে কোমর, ঘাড় এবং পিঠে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। তার উপর যদি আরও অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হয়, সে ক্ষেত্রে ব্যথার পরিমাণ বাড়বে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করার ফলে নারীদের ঘাড়ে এবং পুরুষদের মধ্যে কোমরে ব্যথার সমস্যা বেড়ে যায়।
হৃদ্রোগের ঝুঁকি
আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত এক গবেষণা অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের কাজের চেয়ে অতিরিক্ত সময় কাজ করার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। গবেষণায় বলা হয়, প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৬১ থেকে ৭০ ঘণ্টা এবং ৭১ থেকে ৮০ ঘণ্টা কাজ করার অভ্যাস থাকলে ‘করোনারি আর্টারি ডিজিজ’ বা ধমনীর রোগ বাড়়িয়ে দিতে পারে যথাক্রমে ৪২ শতাংশ এবং ৬৩ শতাংশ।
এ ছাড়া নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত সময় কাজ বাড়িয়ে দিতে পারে হৃদরোগের ঝুঁকি।
মানসিক অবসাদ
অতিরিক্ত কাজের চাপ মানসিক অবসাদ বাড়িয়ে দেয়। ফলে শরীরবৃত্তীয় নানা কাজের ওপর প্রভাব পড়ে। এর ফলে হার্টের রোগ, রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি ছাড়াও নানাবিধ সমস্যা চেপে ধরে।
সম্পর্কে অবনতি
দিনের বেশিরভাগ সময় অফিসে কাটালে পরিবার, বন্ধু, স্বজনদের সময় দিতে পারবেন না এটাই স্বাভাবিক। ফলে একটা সময় গিয়ে অন্যদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে। এতে হীনমন্যতায় ভুগতে পারেন। তাই কাজের বাইরে অবসর রাখা উচিত এবং অবসরে প্রিয়জনদের সময় দেয়াও জরুরি।
মদ্যপান ও ধূমপান বেড়ে যাওয়া
বেশি সময় কাজ মানেই বেশি প্রেশার, আর উদ্বেগ। আর উদ্বেগ সামলাতে গিয়ে কিছু সময় পর পর ধূমপান করাও অনেকের অভ্যাস। কেউ কেউ কাজের ফাঁকে হালকা মদ্যপানও করেন।
এনএমএম/