প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৩, ০৩:৩২ এএম
যা কিছু অশুভ, ভৌতিক, তার সঙ্গেই কালো বিড়াল জড়িয়ে আছে! বাড়ির আশপাশে কালো বিড়াল দেখলেই বুক দুরুদুরু করে! ভূতের সিনেমা বা গল্পেও প্রেতাত্মা, অশুভ আত্মা বা ডাইনির ভূমিকায় কালো বিড়ালের দেখা মেলে! সেই কোন যুগ থেকে কালো বিড়ালকে অশুভ মানা হয়! এমনকী কালো বিড়াল রাস্তা পাড় হলে গাড়ি থামিয়ে দেন চালক! পথচলতি মানুষও খানিক্ষণ অপেক্ষা করে রাস্তা পার হন! জানেন কি, কেন কালো বিড়ালকে অশুভ মানা হয়?
দেখা গিয়েছে, তিন হাজার খ্রিস্ট পূর্বাব্দে ইজিপ্সিয়ানরা বিশ্বাস করতো, কালো বিড়ালের মধ্যে কিছু আধ্যাত্মিক শক্তি রয়েছে। তারা কালো বিড়ালকে পুজোও করত। কালো বিড়ালকে আঘাত করা বা তাকে মেরে ফেলাকে অশুভ মানত ইজিপ্সিয়ানরা। ১৫৬০ সালে ইউরোপের বিভিন্ন উপকথায় কালো বিড়ালকে অশুভ হিসেবে দেখানোর চল শুরু হয়। ধীরে ধীরে মানুষের মধ্যে বিশ্বাস জন্মায়, সত্যিই হয়তো কালো বিড়ালের মধ্যে লুকনো অপয়া কোনো শক্তি আছে।
কালো বিড়াল রাস্তা কাটলে গাড়ির চালক একটুক্ষণ অপেক্ষা করে তারপর যান! বিড়াল রাস্তার পাড় করে চলে গেলে পথচলতি মানুষও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে যান! এই প্রথা চলে আসছে সেই কোন যুগ থেকে! এর পিছনেও রয়েছে বৈজ্ঞানিক কারণ! আগে কার দিনে গরুর গাড়ির প্রচলন ছিল আর গরুদের সামনে দিয়ে বিড়াল গেলেই তারা অস্থির হয়ে পড়ত। গরুদের শান্ত করতে চালককে কিছুক্ষণের জন্য গাড়ি থামিয়ে দিতে হত। সেই রেওয়াজই নাকি পরবর্তীকালে কুসংস্কারে পরিণত হয় এবং সেই থেকেই নাকি যে কোনো গাড়ির সামনে দিয়ে কালো বিড়াল গেলেই, গাড়ি থামিয়ে দেওয়ার রীতি শুরু হয়।
রয়েছে আরো কারণ! বিড়াল জাতীয় ছোট প্রাণীদের সাধারণত অন্য বড় প্রাণী বা মানুষ তাড়া করে। এর ফলে তারা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছোটাছুটি করে ৷ তাই বিড়াল রাস্তা পার করার পর একটু দাঁড়িয়ে গেলে ঐ প্রাণী বা মানুষের সঙ্গে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা কমে যায়৷ সেখান থেকেই শুরু হয় বিড়াল রাস্তা পাড় করলে দাঁড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা।
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে রাহুকে অশুভ গ্রহ মানা হয়। রাহুর প্রভাবে জীবনে দুর্ঘটনার যোগ আসতে পারে। বৈদিক জ্যোতিষ অনুসারে বিড়ালরাহুল বাহন। এই কারণেই বিড়াল পথ কাটলে তা অশুভ বলে মনে করা হয়। কারণ বিড়াল পথ কাটছে মানে সেখানে রাহুর প্রভাব রয়েছে। তবে, কালো বিড়ালকে অশুভ মনে করা সম্পূর্ণই কুসংস্কার! বিড়ালের কালো রং-এর সঙ্গে তার পয়া বা অপয়া হওয়ার কোনো কারণ নেই!