প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩, ০৪:০৯ পিএম
শীতকালে অল্প ঠান্ডাতে কিছুটা হলেও জমে যাই আমরা। ঠান্ডাতে যেন আমাদের হাত-পা চলতেই চায় না। শীতের দিনে বদলে যায় আমাদের জীবনযাপন, একটু উষ্ণতা খুঁজতে গিয়ে অনেক কিছুই করি আমরা। আর এই দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ছেদ পড়ে, স্বাস্থ্যগত কিছু ভুল হয়ে যায়। এমন কিছু ভুল আছে যেগুলো শীতের সকালে বেশিরভাগ মানুষ করে থাকেন এবং বুঝতেও পারেন না যে এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য কি মারাত্মক হুমকি ডেকে আনছে।
জেনে নেওয়া যাক ভুলগুলো সম্পর্কে-
১. শীতের সকালে ঠাণ্ডা বাতাস, কুয়াশা থাকবেই। শীতঠাণ্ডার মধ্যে ব্যায়াম করা অনেকেই বাদ দিয়ে দেন। গরমের দিন যারা মর্নিং ওয়ার্ক করতেন, তারাও ঠাণ্ডার বাহানায় ঘরে বসে থাকেন। এই কাজটি কখনোই করবেন না। বাইরে যাওয়া সম্ভব না হলে ঘরে ব্যায়াম করুন, কিন্তু অবশ্যই করুন।
২. ঘুম থেকে উঠেই উষ্ণতা পেতে সবার আগ্রহ থাকে চা বা কফিতে। তবে যত ঠাণ্ডাই পড়ুক না কেন, খালি পেটে চা-কফি পান মোটেও ভালো অভ্যাস নয়। এমনকি নাস্তা করার সঙ্গে সঙ্গেও নয়। চা বা কফি খেতে হবে নাস্তার অন্তত এক ঘণ্টা পর।
৩. আলসেমি করে দাঁত ব্রাশ না করার অভ্যাসটিও আছে অনেকের মধ্যে। পানি ধরতেই যেন যত ভয়। রাতে দাঁত ব্রাশ করে ঘুমাবেন, সকালে উঠেই কুলি করে নেবেন ভালো করে। তারপর নাস্তার পর দাঁত ব্রাশ করে নেবেন। এতে অবহেলা করবেন না কখনো।
৪. শীতের সকালে ঠাণ্ডার অজুহাতে ত্বকের যত্ন নিতেও ভালো লাগে না। কিন্তু ত্বককে অবহেলা করলে চেহারা একেবারে নষ্ট হয়ে যাবে। তাছাড়া শীতের দিনেই ত্বকের চাই বিশেষ যত্ন। সকালে ত্বকের যত্নকে অবহেলা করবেন না মোটেও।
৫. গরমের দিনে আয়োজন করে সকালের নাস্তা করা হলেও শীতের দিনে অনেকেই শর্টকাট খোঁজেন। আবার অনেকেই বেছে নেন বেশি তৈলাক্ত খাবার। যেমন শীতের সকালে গরম পরোটা খেতে কিন্তু বেশ লাগে। আবার অনেক বাড়িতে নাস্তায় তৈরি হয় কেবল মাত্র পিঠা। পরোটা উচ্চ ক্যালোরি ও ফ্যাটযুক্ত একটি খাবার। অন্যদিকে পিঠায় আছে উচ্চমাত্রায় চিনি। এমন খাবার দিয়ে সকাল শুরু করা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়।
৬. শর্টকাট নাস্তার খোঁজে অনেক বাড়িতেই বেছে নেওয়া হয় পাউরুটি, জেলী, কর্ণফ্লেক্স ইত্যাদি। যতই আধুনিক জীবনে এদেরকে প্রাধান্য দেয়া হোক না কেন, নাস্তায় এসব খাবার কখনো স্বাস্থ্যকর নয়। সাদা ময়দায় তৈরি পাউরুটি, অতিরিক্ত মিষ্টি ও রঙ দেয়া জেলী ও কারখানায় তৈরি কর্ণফ্লেক্স সবসময় স্বাস্থ্যকর নাও হতে পারে।
৭. শীতের সকালে আমরা আরও একটা ভুল কাজ করে ফেলি। সেটা হলো ঘুম থেকে উঠেই এক গাদা কাপড় পরে ফেলা। সারা রত কম্বলের নিচে থাকার পর সকালে একটু ঠাণ্ডা লাগবে। নিজের দৈনন্দিন কাজ করতে শুরু করুন, ঠাণ্ডা ভাবটা কেটে যাবে। খুব বেশি কাপড় পরতে গেলে ঘেমে গিয়ে বুকে ঠাণ্ডা বসে যেতে পারে।
৮. শীতের সকাল মানেই আলস্য। সঠিক সময়ে ঘুম ভেঙে গেলেও বিছানার মায়া যেন কাটতে চায় না কিছুতেই। সকলেই কম্বল মুড়ি দিয়ে আরও কয় মিনিট বাড়তি ঘুমের বাহানা খোঁজেন। এই কাজটি না করাই উত্তম। কেননা এতে ছেঁকে ধরবে এক রাশ আলস্য আর সারাদিনটাই খারাপ যাবে।
৯. শীতে আর কুয়াশায় ম্যাজম্যাজে পরিবেশ দেখে অনেকেই মন খারাপ ও খিটখিটে মেজাজ নিয়ে শুরু করেন শীতের সকাল। এটার কিন্তু একদম প্রয়োজন নেই। মন খারাপ নিয়ে দিন শুরু করলে সারাদিনে কিছুতেই সফল হতে পারবেন না। শীত একটা চমৎকার মৌসুম আর আমাদের দেশে খুবই অল্প সময়ের জন্য আসে। তাই মজা নিতে চেষ্টা করুন শীতের মৌসুমের। সকালে ঠাণ্ডা পানিতে হাত-মুখ না ধুয়ে উষ্ণপানি ব্যবহার করুন, এটা আপনাকে সতেজ করবে। সারাদিন বাইরে থাকতে হলে সকালেই গোসল সেরে নিন। শীতের সকালে বেশিক্ষণ বিছানায় গড়াগড়ি করার চেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে জেগে উঠুন সকাল সকাল। সেক্ষেত্রে শরীরটা আবারও ঝরঝরে করে তুলতে বেশ অনেকটা সময় পাবেন। দেহ-মনকে চাঙা করতে কাজের ফাঁকে ফাঁকে সেরে নিতে পারেন হালকা ব্যায়াম।