• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ওষুধ ছাড়াই ঘুমের সমস্যা দূর করতে পারবেন কিভাবে! বিস্তারিত জানতে পড়ুন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩, ০১:৫৫ এএম

ওষুধ ছাড়াই ঘুমের সমস্যা দূর করতে পারবেন কিভাবে! বিস্তারিত জানতে পড়ুন

লাইফস্টাইল ডেস্ক

বর্তমান সময়ে বিভিন্ন কারণে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। আর ঘুম না হলে বেশির ভাগ মানুষই মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে লাইক গোনেন। ঘুম কেড়ে নেয় এই মোবাইলের নেশাই। আজকের দিনে কিশোর-কিশোরী থেকে বয়স্ক মানুষ সকলেরই ঘুমের ঘাটতির মূল কারণ সোশ্যাল মিডিয়া। এ ছাড়াও আরও নানা কারণে ঘুমের অসুবিধা হয়।

কম ঘুম মানেই হাজারো রোগভোগ। আর এই বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে আজ, ১৫ মার্চ পৃথিবী জুড়ে পালন করা হচ্ছে ওয়ার্ল্ড স্লিপ ডে। ‘ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন অব স্লিপ মেডিসিন’ ২০০৮ সালে প্রথম স্লিপ ডে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়।

ঘুমের প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি ঘুম সংক্রান্ত নানা সমস্যা— ইনসমনিয়া, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া, রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম, সোমনামবুলজিম-সহ নানান বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতেই এই পদক্ষেপ।

‘ওয়ার্ল্ড স্লিপ সোসাইটি’-র পক্ষে ঘুম বিশেষজ্ঞ সৌরভ দাস এবং উত্তম আগরওয়াল জানালেন, ‘‘নাক ডেকে ঘুম মানে ‘নিশ্ছিদ্র নিদ্রা’ নয়। এর ডাক্তারি নাম অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া বা ওএসএ। এই অসুখতি থাকলে ঘুমের মধ্যে বিকট শব্দে নাক ডাকে। সঠিক চিকিৎসায় এই সমস্যা না সারালে নানান অসুখ বিসুখের ঝুঁকি ক্রমশ বাড়তে থাকে।’’

ঘুম ভাল হলে কমে হাজারো অসুখ।বিশ্বের প্রতি ১০০ জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মধ্যে ৩৫-৪৫ জন ঘুমের সমস্যায় ভোগেন। কম ঘুম মানুষের জীবনের গুণমান নষ্ট করে। শুধু তা-ই নয়, কম ঘুমোলে ডিপ্রেশন বাড়ে, মনঃসংযোগ কমে যায়। ছোটরা পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে পড়ে ফলাফল খারাপ হতে শুরু করে। আর বড়দের অফিস ও প্রোফেশনাল কাজের পারফরম্যান্স খারাপ হতে শুরু করে।

ঘুম কম হলে মানসিক সমস্যাও বাড়ে। মানুষে-মানুষে সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে, ধৈর্য কমে যায়। মেজাজ চড়ে যায়। দিনের পর দিন কম ঘুম হলে ক্ষিপ্রতাও কমে যায়।

তবে আশার কথা, বেশির ভাগ স্লিপ ডিসঅর্ডার প্রতিরোধযোগ্য। সেরেও যায়। তবে এক তৃতীয়াংশের কম সংখ্যক মানুষের এই সমস্যার জন্য কোনও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে থাকেন, বাকিরা এই বিষয়ে উদাসীন, যা চরম ক্ষতি ডেকে আনছে।

আট ঘণ্টা না পারলেও নিয়ম মেনে অন্তত সাত ঘন্টা ঘুম জরুরি। ছোটদের আরও বেশি ঘুম দরকার। ঘুমের মধ্যে গ্রোথ হরমোন বেশি নিঃসৃত হয়। তাই বাচ্চারা কম ঘুমোলে তাদের বাড়বৃদ্ধি ঠিক মতো হয় না।

জ্বর, ভাইরাল ইনফেকশন বা পেটের গোলমালের মতো অসুখে ভাল করে ঘুমালে দ্রুত সুস্থ হওয়া যায়। প্রতি দিনের ঘুম আমাদের রোজকার ওয়্যার অ্যান্ড টিয়ার মেরামত করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও মন ভাল রাখতে সাহায্য করে।

ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা অর্থাৎ স্লিপ অ্যাপনিয়া থাকলে হাইব্লাডপ্রেশার, হার্টের অসুখ, আচমকা হার্ট অ্যাটাক ও ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।

ভাল ঘুমের টিপ্‌স

#ঘুমোতে যাওয়ার আর ঘুম থেকে ওঠার সময় নির্দিষ্ট করুন।

#বিছানায় যাওয়ার অন্তত দু’ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিলে ভালো হয়।

#রাতে বেশি জল পান করবেন না।

#সন্ধ্যের পর চা, কফি, সিগারেট না খাওয়াই ভাল। এতে ঘুম আসতে চায় না।

#সকাল সন্ধে কিছুটা এক্সারসাইজ করলে ভাল ঘুম হয়।

#মদ্যপান করলে সাময়িক ভাবে ঘুম পেলেও পরে নেশাগ্রস্ত হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

#ঘুমোনোর চার ঘন্টা আগে মিষ্টি বা বেশি মশলাদার খাবার খাবেন না।

#বিছানাকে কেবল ঘুমোনোর জায়গা হিসেবেই ব্যবহার করুন, ওয়ার্ক স্টেশন অথবা আড্ডার জায়গা করে তুলবেন না। বরং ঘুমোতে যাওয়ার সময় হালকা গান শুনতে পারেন অথবা পছন্দের বই পড়তে পারেন।

#ঘুম কম হলে বা না হলেই ওভার দ্য কাউন্টার ঘুমের ওষুধ কিনে খাবেন না।

#ঘুমোতে যাওয়ার আগে হালকা সুতির পোশাক পরে নিন। টাইট পোশাক পড়লে ঘুমের অস্বস্তি হয়। আর ঘুমের সময় ফ্রেশ পোশাক পরাই বাঞ্ছনীয়।

#এক নাগাড়ে ঘুমের অসুবিধে হলে অবশ্যই একজন নিদ্রা বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিন।

আর্কাইভ