• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ঘি খেলে যাদের হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৩, ০৯:৪০ পিএম

ঘি খেলে যাদের হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দুগ্ধজাত খাবারগুলোর মধ্যে ঘিকে সবচেয়ে দামি এবং আভিজাত্যপূর্ণ খাবার হিসেবে গণ্য করা হয়। খাবারের গুণাগুণ বিবেচনা করে পুষ্টিবিদরা একে তরল সোনার সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। কিন্তু কখনও কখনও এই তরল সোনাই কারো কারো জীবনে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

ঘি একটি পুষ্টিকর প্রাকৃতিক উপাদানসমৃদ্ধ খাবার। এটি সহজে হজমযোগ্য চর্বি যা শরীরের তাপ উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।

খাঁটি মাখনকে চুলায় মৃদু আঁচে গরম করলেই তা ঘিয়ে পরিণত হয়। একটি স্বাস্থ্যকর জীবনের অধিকারী হতে অবশ্যই ডায়েটে ঘিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

অনেকের মনে একটা ভুল ধারণা আছে, ঘি স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ হিসেবে তাদের ধারণা হলো ঘি ওজন এবং খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়, যা ঘি সম্পর্কে ভুল ধারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।

কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাড়ের সুস্থতা, পাচনতন্ত্রের উন্নতি, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি এবং স্নায়ুতন্ত্রের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ঘি বেশ উপকারী। পুষ্টিবিদরা বলছেন, নিয়মিত ১ চা চামচ ঘি খাওয়ার অভ্যাসে আপনার সুস্বাস্থ্যের শতভাগ দায়িত্ব পালন করার ক্ষমতা রাখে এই ঘি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঘি ওমেগা ৩-এর একটি দারুণ উৎস। এ ছাড়া এটি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন এ, ই, ডি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। তাই নিয়মিত ১ চা চামচ ঘি খাওয়ার অভ্যাস আপনার শরীরের সব কোষের বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।

ঘিতে পাওয়া স্বাস্থ্যকর এবং সমৃদ্ধ ফ্যাটি অ্যাসিড আপনার চুলে শুধু পুষ্টি জোগায় না বরং এটিকে নরম, চকচকে এবং স্বাস্থ্যকর করে তোলে। তাই ঘি খাওয়া বা চুলে লাগানো উভয়ই উপকারী।

চুলের যত্নে ঘিয়ের গুণের কথা না বললেই নয়। ঘিতে থাকা উপাদান চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে, চুলকে কন্ডিশন করার পাশাপাশি ত্বককে হাইড্রেট করে এবং পুষ্টি জোগায়।

আপনার চুলে খুশকি সমস্যা কিংবা ত্বকে চুলকানির সমস্যা থাকলে তা থেকে সহজেই মুক্তি পেতে পারেন নিয়মিত ঘি খাওয়ার মাধ্যমে।

ত্বকের নানান সমস্যার সমাধানে, কর্মক্ষমতা বাড়াতে, স্ট্রেস কমাতে, কোষকে পুনর্জীবিত করতে, বাট্রিক অ্যাসিডেন উপাদানের জন্য পরিপাকতন্ত্রের ক্ষমতা বাড়াতে ঘিয়ের জুরি নেই। ভিটামিন ডি এর উৎস এই ঘি হাড়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি হার্ট ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে।

হঠাৎ সর্দি, কাশি বা কফ থেকে মুক্তি পেতে কিংবা আকর্ষণীয় ত্বকের অধিকারী হতে রূপচর্চায় ব্যবহার করতে পারেন ঘিকে। তবে খাওয়ার ক্ষেত্রে ঘিকে রান্নার কাজে ব্যবহার না করে গরম ভাতের সঙ্গে ঘি খাওয়ার অভ্যাস করলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায় বলে মনে করেন পুষ্টিবিদরা। রোগা ও শারীরিক কসরত করে এমন মানুষ নিয়মিত ঘি খাওয়ার মাধ্যমে বেশি উপকার পাবেন।

তবে সুপার ফুড এই ঘি কখনও কখনও ক্ষতির কারণ হতে পারে আপনার। যদি সীমিত পরিমাণের বেশি ঘি খাওয়া হয় তবে শরীরে এর উপকারিতা নয় বরং দেখা দেবে এ খাবারের অপকারিতা। বমিভাবের সঙ্গে দেখা দিতে পারে অস্থিরতাও।

যারা অফিসে দৈনিক ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বসে কাজ করে থাকেন তবে তাদের ঘি মোটেও খাওয়া উচিত নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদি তারা ঘি খেতে চান তবে তাদের অবশ্যই নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস থাকতে হবে। যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তারাও ঘি এড়িয়ে চলুন। কারণ ঘি ডায়াবেটিস রোগীদের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাতে পারে।

আর্কাইভ