প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২৩, ০১:৫০ এএম
নিয়মিত শরীরচর্চা করলে হার্টের স্বাস্থ্যের তো উন্নতি ঘটেই, সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। শুধু তাই নয়, যারা ইতিমধ্যেই এই মারণ রোগে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতেও সময় লাগে না। ব্রিটিশ জার্নাল অব স্পোটস মেডিসিন-এ প্রকাশিত এক গবেষণা পত্র অনুসারে এমনটাই জানা যাচ্ছে।
তাই যাদের পরিবারে ব্লাড প্রেসারের মতো রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা দয়া করে প্রতিদিন একটু এক্সারসাইজ করতে ভুলবেন না যেন! প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ গবেষকদের করা এই গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত শরীরচর্চা করলে যে কেবল ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে, এমন নয়, আরও একাধিক শাররিক উপকার পাওয়া যায়। যেমন ধরুন-
এনার্জির ঘাটতি দূর হয়
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত শরীরচর্চা করলে দেহের প্রতিটি অংশে অক্সিজেন সমৃদ্ধি রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে সার্বিকভাবে শরীর তো চাঙ্গা হয়ে ওঠেই, সেই সঙ্গে হার্ট এবং ফুসফুসের ক্ষমতা চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়। ফলে এনার্জির ঘাটতি দূর হতেও সময় লাগে না। তাই দীর্ঘ দিন যদি শরীরকে চাঙ্গা রাখতে হয়, তাহলে শরীরচর্চা করা মাস্ট!
অনিদ্রার মতো সমস্যা দূরে পালায়
বেশিরভাগ দিনই কি রাত্রে ঠিক মতো ঘুম হয় না? তাহলে বন্ধু নিয়মিত একটু এক্সারসাইজ না করলে কিন্তু চলবে না। কারণ শরীরচর্চা করলে স্বাভাবিকভাবেই শরীর ক্লান্ত হয়ে পরে। সেই সঙ্গে এমন কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায় যে রাত্রে ঘুম আসতে সময় লাগে না। আর ঠিক এই কারণেই তো ইনসমনিয়ার মতো সমস্যায় যারা ভুগছেন, তাদের নিয়ম করে শরীরচর্চা করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
অস্টিওপোরোসিস মতো হাড়ের রোগ দূরে থাকে
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে, নিয়মিত মনিং ওয়াক অথবা দৌড়ানোর পাশাপাশি যদি ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যায়, তাহলে হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি তো ঘটেই, সেই সঙ্গে জয়েন্টের সচলতাও বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বয়সকালে গিয়ে নানাবিধ হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে। প্রসঙ্গত, কোনও কারণে যদি দৌড়াতে বা জোরে হাঁটতে না পারেন, তাহলেও কোনও চিন্তা নেই! ধীরে ধীরে হাঁটলেও কিন্তু সমান উপকার পাওয়া যায়।
মানসিক অবসাদ দূরে পালায়
এক্সারসাইজ করার সময় মস্তিষ্কে বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। যে কারণে মন-মেজাজ একেবারে চাঙ্গা হয়ে ওঠে। তাই এবার থেকে মন খারাপ করলেই কিছুটা সময় হাত-পা নেরে নেবেন। তাহলেই দেখবেন কেল্লাফতে!
স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে
বেশ কিছু গবেষণায় এ কথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে শরীরচর্চা করার সময় আমাদের মস্তিষ্কের হিপোকম্পাস অংশটির ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে চোখে পরার মতো। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেই রিপোর্ট অনুসারে গত কয়েক বছরে আমাদের দেশে স্মৃতিলোপ বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগের প্রকোপ মারাত্মক ভাবে বৃদ্ধি পয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে স্মৃতিশক্তিকে আগলে রাখাটা যে কতটা প্রয়োজনের, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না।
মনোবল বৃদ্ধি পায়
এ কথার মধ্যে কোনও ভুল নেই যে নিয়মিত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করলে এনার্জির ঘাটতি দূর হয়। সেই সঙ্গে শরীর এবং মন এতটাই চনমনে হয়ে ওঠে যে স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। ফলে শুধু কর্মক্ষেত্রে নয়, জীবনের প্রতিটি যুদ্ধে সাফল্য় পেতে কোনও বাঁধারই সম্মুখিন হতে হয় না।
ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে
অতিরিক্ত ওজন একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। যেমনটা আপনাদের সবারই জানা আছে যে ওজন যত বাড়তে থাকে, তত রোগের ডিপো হয়ে ওটে আমাদের শরীরটা। তাই তো ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে শরীরচর্চার কোনও বিকল্প আছে বলে তো মনে হয় না। দেখা গেছে প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করলে দেহে জমে থাকা অতিরিক্ত ফ্যাট চোখে পরার মতো কমে যায়।
স্ট্রেসের মাত্রা কমে চোখে পরার মতো
কাজের চাপ তো আছেই। সেই সঙ্গে আরও নানা কারণে যেভাবে কম বয়সিদের জীবনে স্ট্রেসের মাত্রা বাড়ছে তা বাস্তবিকই ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই তো মানসিক চাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের চেষ্টা চালানো উচিত। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ বন্ধুরা! এখন প্রশ্ন হল স্ট্রেসকে বাগে আনবেন কিভাবে? এ ক্ষেত্রে শরীরচর্চার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এক্সারসাইজ করার সময় মস্তিষ্কের ভিতরে নোরেপিরেফিরিন নামে এক ধরনের হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। যে কারণে স্ট্রেস লেভেল কমতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, শরীরচর্চার সময় ঘামের সঙ্গে রক্তে মিশে থাকা নানাবিধ টক্সিক উপাদানও বেরিয়ে যায়। এই কারণেও মানসিক চাপ অনেকটা কমে যায়।