• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শীতে পা ঠান্ডা হয়ে পেশিতে টান, সারাতে যা করবেন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৩, ০৭:০৪ পিএম

শীতে পা ঠান্ডা হয়ে পেশিতে টান, সারাতে যা করবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক

কনকনে শীত। এ শীতে পা ঠান্ডা হয়ে অবশ হয়ে যাওয়া কিংবা পেশিতে টান ধরার ঘটনা প্রায় সবার সঙ্গেই ঘটে। এমনকি ঘুমের মধ্যেও এ সমস্যা হতে পারে। আবার ঘুম থেকে উঠতে গেলে কিংবা সকালে হাঁটতেই পায়ের শিরায় টান ধরতে পারে। কখনও বা হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎই বেঁকে যায় পায়ের আঙুল। যে দিকেই সরাতে যাচ্ছেন, ব্যথা করছে।

ঘুমের মধ্যে পায়ের রগ টান খেলে ব্যথায় ঘুম ভেঙে যায়। তখন অনুভব করলেন পা নাড়াতে পারছেন না। অথচ কী করলে ব্যথা কমবে বুঝতেও পারছেন না। তারই মধ্যে দেখছেন পায়ের আঙুল বেঁকে যাচ্ছে। পা টান করা যাচ্ছে না। একইভাবে টান ধরতে পারে কোমর, পিঠ, ঘাড় কিংবা হাতেও।

মূলত ঠান্ডা আবাহাওয়ার কারণে পেশিতে টান ধরার ঘটনা বেড়ে যায়। শুধু যে ঘুমের মধ্যেই পেশিতে টান লাগবে, এমন নয়। কখনও কখনও হাত-পা ছড়িয়ে বিশ্রাম নেওয়ার সময়ও পেশিতে প্রবল টান পড়তে পারে। অনেক সময় আমাদের অনিয়মিত ও অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া এ ধরনের সমস্যার জন্য দায়ী হয়। এ ছাড়াও একাধিক কারণ রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতে ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে অনেকেই পর্যাপ্ত পানি পান করেন না। এর থেকে শরীরে ডিহাইড্রেশনের সৃষ্টি হয়। শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে এই টান ধরার প্রবণতা বাড়ে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেলে ধমনীগুলোর ভেতর চর্বির আস্তরণ তৈরি হয়। একে ‘অ্যাথেরোস্ক্লেরসিস’ বলে। এই আস্তরণ বা প্লাক তৈরির ফলে রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্ত চলাচল করতে পারে না, এই সমস্যাকে বলে ‘পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ’ বা ‘পিএডি’। এই সমস্যার কারণে ব্যথা হয় বিভিন্ন অঙ্গে।

শীতকালে রগে টান ধরে এমন সমস্যা হতেই থাকে। হঠাৎ রগে টান ধরলে সঙ্গে সঙ্গে কী করা প্রয়োজন জেনে নিন-

পা সোজা করে পায়ের পেছনের মাংসপেশিতে হালকা মালিশ করতে পারেন।

গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে হালকা সেঁক বা পানির বোতলে গরম পানি দিয়ে সেঁক দিতে পারেন ১৫ থেকে ২০ মিনিট।

ভয় পাবেন না। কারণ, সহজভাবে শরীর পেশিগুলো ছেড়ে রাখলে কিছু সময়ের মধ্যে ব্যথা চলে যায়।

গর্ভকালীন যে রগে টান পড়ে, বেশির ভাগ সময় প্রসবের পর পায়ের টান চলে যায়।
কেন হয়-

শরীরে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়ামের ঘাটতি।

অতিরিক্ত ব্যায়াম, পরিশ্রম বা পায়ের পেশির বেশি ব্যবহার।

পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন। খুব ঠান্ডা আবহাওয়া।

গর্ভকালীন, বিশেষ করে শেষের দিকে প্রয়োজনীয় খনিজের অভাবে রগে টান পড়ে।

বেশি সময় বসে থাকা, শক্ত জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা, ঘুমের সময় ভুল দেহভঙ্গির কারণে এমন হতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়-

নিয়মিত কাফ মাসল স্ট্রেচিং করতে হবে।

সোজা হয়ে পায়ের আঙুলের ওপর ভর করে দাঁড়ালে কাফ মাসলে স্ট্রেচ হয়। ১০ সেকেন্ড ধরে রেখে পা নামিয়ে ফেলুন। তিন বা চারবার করুন। প্রতিদিন অন্তত একবার।

বসে দুই পা সোজা করে, তোয়ালে দিয়ে পায়ের পাতা সামনের দিকে টেনে আনার চেষ্টা করুন। ১০ সেকেন্ড ধরে রেখে ছেড়ে দিন। পাঁচ থেকে ছয়বার করুন।

সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ৩০ মিনিট করে হাঁটুন।

শরীরে পর্যাপ্ত পানির অভাব হলে পায়ের মাংস পেশিতে টান লাগে। তাই প্রচুর পানি বা তরল গ্রহণ করুন। যেমন স্যুপ, ফলের রস, ডাবের পানি ইত্যাদি।

ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেমন ডিম, দুধ, সবুজ শাক-সবজি, ফল, কলিজা ইত্যাদি।

আর্কাইভ