প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২১, ০৬:৫০ পিএম
আমাজন নদীর অববাহিকায় পৃথিবীর
সবচেয়ে বড় নিরক্ষীয় বন
আমাজন; যা দক্ষিণ আমেরিকা
মহাদেশের উত্তর ভাগের ৯টি দেশে অন্তর্ভুক্ত।
এর মধ্যে ৬০ ভাগ ব্রাজিলে,
১৩ ভাগ পেরুতে এবং
বাকি অংশ কলম্বিয়া, ভেনিজুয়েলা,
ইকুয়েডর, বলিভিয়া, গায়ানা, সুরিনাম ও ফরাসি গায়ানাতে।
৭০
লাখ বর্গকিলোমিটার অববাহিকা পরিবেষ্টিত এই অরণ্যের প্রায়
৫৫ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকাটি
মূলত আর্দ্র জলবায়ু দ্বারা প্রভাবিত। এ বন প্রায়
৩০ লাখ প্রজাতির উদ্ভিদ
ও প্রাণীর আবাসস্থল।
আমাজন
বিশ্বের প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্যের একটি। যেখান থেকে পাওয়া যায়
পৃথিবীর ২০ ভাগ অক্সিজেন।
আর বিপুল পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাস শোষণ করে জলবায়ু
পরিবর্তন তথা বৈশ্বিক উষ্ণতা
রোধে কাজ করে এই
বন। যার কারণে এই
বনকে বলা হয় ‘পৃথিবীর
ফুসফুস’।
কিন্তিু
‘পৃথিবীর ফুসফুস’ খ্যাত এই বনে বহুদিন
ধরে চলছে অবৈধ জমি
বেচাকেনা। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম
ফেসবুকের কারণে কয়েকগুণ বেড়েছে। এতে করে ক্রেতাদের
বেশির ভাগই বন ধ্বংস
করে কৃষিকাজ করছেন। ফলে পৃথিবীর এই
অমূল্য সম্পদ দিন দিন ধ্বংস
হয়ে যাচ্ছে।
কয়েক
বছর ধরে আমাজন বন
ধ্বংসের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাও চলছে। আমাজন রক্ষায় বিশ্বের বড় বড় ধনীকে
এগিয়ে আসার আহ্বানও জানাচ্ছেন
পরিবেশবাদীরা।
এ
ক্ষেত্রে সবার আগে এগিয়ে
এসেছেন সুইডেনের ধনকুবের জোহান ইলিয়াস। একেবারেই ব্যতিক্রমী চিন্তা-ভাবনা নিয়ে কাজ করছেন
তিনি। শুধু আমাজন বন
রক্ষার উদ্দেশ্যে চার লাখ একর
জমি কিনেছেন। এজন্য ব্রাজিলের এক কোম্পানিকে প্রায়
এক কোটি ৪০ লাখ
ডলারও দেয়া হয়েছে।
সুইডিশ
ধনকুবের জোহান ইলিয়াস পরিবেশ সুরক্ষার কাজ করে ইতোমধ্যে
বেশ পরিচিতি পেয়েছেন। নিজ উদ্যোগে গড়ে
তুলেছেন পরিবেশবাদী সংগঠন ‘রেইনফরেস্ট ট্রাস্ট’।
এ
সংগঠনের মাধ্যমেই ২০০৫ সালে ব্রাজিলের
আমাজনে প্রথম একটি প্রকল্প কেনেন
তিনি। পরে মেডেইরা রিভারের
কাছের এলাকায় প্রায় চার লাখ একর
তথা এক হাজার ৬০০
বর্গকিলোমিটার আয়তনের একটি জমি কিনেছেন
তিনি। শুধু আমাজন বনই
নয়, বিশ্বজুড়ে বনভূমি রক্ষায় কাজ করছেন জোহান।
এ জন্য ‘কুল আর্থ’ নামে আরও একটি
সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছেন।
সম্প্রতি
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯
সালের আগস্ট থেকে ২০২০ সালের
জুলাই পর্যন্ত ব্রাজিলের আমাজনের মোট ১১ হাজার
৮৮ বর্গকিলোমিটার বন ধ্বংস হয়েছে।
ব্রাজিলে
আমাজনের উষ্ণমণ্ডলীয় বনভূমির কিছু অংশ অবৈধভাবে
ফেসবুকে বিক্রি করা হচ্ছে বলে
সম্প্রতি বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে
এসেছে। সেই প্রতিবেদন থেকে
জানা গেছে, যেসব এলাকা বিক্রি
হচ্ছে এগুলো সংরক্ষিত এলাকা- যার মধ্যে আছে
জাতীয় বনভূমি এবং আদিবাসীদের জন্য
নির্ধারিত এলাকা।
ফেসবুকে
‘ক্লাসিফায়েড অ্যাড’ সেবার মাধ্যমে তালিকাভুক্ত আমাজনের এসব প্লটের কোনো
কোনোটি এক হাজার ফুটবল
মাঠের সমান বড়। ব্রাজিলে
এখন বড় আকারে যেসব
গবাদি পশুর খামার শিল্প
গড়ে উঠেছে তা এই অবৈধ
কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করছে বলে মনে
করা হয়।
টিআর/এম. জামান