
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২৫, ১২:৩০ পিএম
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং তার সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে ঘনিষ্ঠ সহযোগী হুসেইন আল-শেখের নাম ঘোষণা করেছেন। পিএলও’র নির্বাহী কমিটির সদস্য ওয়াসেল আবু ইউসুফ শনিবার এই তথ্য জানান।
এ সপ্তাহে রামাল্লায় অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে সহ-সভাপতির পদ সৃষ্টি হওয়ার পর ৮৯ বছর বয়সী আব্বাস হুসেইন আল-শেইখকে এ পদে নিয়োগ দেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, পিএলও-র সংস্কারের জন্য কয়েক বছরের আন্তর্জাতিক চাপের পর এই পদ সৃষ্টি করা হলো এবং এটি এমন সময়ে এলো যখন আরব ও পশ্চিমা শক্তিগুলো গাজা যুদ্ধোত্তর শাসনে আব্বাসের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) সম্প্রসারিত ভূমিকার কথা ভাবছে।
পিএলও-র নির্বাহী কমিটির সদস্য ওয়াসেল আবু ইউসুফ এএফপিকে বলেন, ‘ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস পিএলও নেতৃত্বের একজন ডেপুটি (সহ-সভাপতি) হিসেবে হুসেইন আল-শেইখকে নিয়োগ দিয়েছেন।’
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের মতে, আব্বাসের মৃত্যু বা পদত্যাগের ক্ষেত্রে, সহ-সভাপতিই পিএলও এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব নেবেন, যেটিকে প্রায় ১৫০টি দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে।
১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত পিএলও ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা ও স্বাক্ষরের ক্ষমতা রাখে, আর পিএ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের নির্দিষ্ট অংশে শাসনকার্য পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।
পিএলও একটি ছাতাসংস্থা, যাতে বহু ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী রয়েছে; তবে হামাস ও ইসলামিক জিহাদের মতো সশস্ত্র গোষ্ঠী, যারা বর্তমানে গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে লড়ছে, তারা এর অন্তর্ভুক্ত নয়।
৬৪ বছর বয়সী শেইখ, আব্বাসের ফাতাহ আন্দোলনের এক অভিজ্ঞ নেতা, যিনি পিএর নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছেএবং যিনি আব্বাসের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
তিনি ১৯৭০-এর দশকের শেষ এবং ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে টানা ১০ বছরেরও বেশি সময় ইসরাইলি কারাগারে কাটান, যেখানে তিনি হিব্রু ভাষা শেখেন।
২০২২ সালে তাকে পিএলও নির্বাহী কমিটির মহাসচিব এবং এর আলোচনা বিভাগের প্রধান করা হয়—এই সংবেদনশীল দায়িত্বে আব্বাসের প্রতি তার ঘনিষ্ঠতা প্রতিফলিত হয়।
সম্প্রতি আব্বাস তাকে বিদেশে ফিলিস্তিনি কূটনৈতিক মিশন তদারকির জন্য গঠিত এক কমিটির প্রধানও নিয়োগ দিয়েছেন। গত মার্চ মাসে, কায়রোতে গাজা যুদ্ধোত্তর ভবিষ্যৎ নিয়ে আয়োজিত এক শীর্ষ সম্মেলনে আব্বাস ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, তিনি পিএলও-র ভেতর একটি সহ-সভাপতির পদ সৃষ্টি করবেন।
২০০৫ সালে ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর পর থেকে আব্বাস পিএর প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। পরের বছর তিনি চার বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন, তবে এরপর আর কোনো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। সূত্র: আলজাজিরা