
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৩, ২০২৫, ০১:০৬ পিএম
ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের (আইআইওজেকে) পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনা ‘ফলস ফ্ল্যাগ’ বা সাজানো হামলা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছে পাকিস্তানির সংবাদমাধ্যম আরওয়াই নিউজ। পর্যটকদের জনপ্রিয় গন্তব্য পাহাড়ি ও মনোরম এই এলাকায় এক মর্মান্তিক হামলায় কমপক্ষে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এমন খবর দিয়েছে আরওয়াই নিউজ।
এতে বলা হয়েছে, ‘বিশ্লেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এটি ‘ফলস ফ্ল্যাগ’ বা সাজানো হামলা হতে পারে। অতীতেও মোদি সরকার এমন হামলা ঘটিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব হামলা প্রায়ই দেশটির অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতা আড়াল করতে এবং পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব উস্কে দিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে’।
‘এই হামলার পরপরই ভারতের গণমাধ্যম ও রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) এর সঙ্গে যুক্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টগুলো পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে ভিত্তিহীন অভিযোগ ছড়াতে শুরু করে’।
এতে আরও বলা হয়, ‘এমনকি হামলাকে ধর্মীয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে তুলে ধরার অপচেষ্টা চালানো হয়, যেখানে দাবি করা হয়েছে—অমুসলিম পর্যটকদের টার্গেট করে হামলা চালানো হয়েছে’।
‘আগের মতোই ভারতের মূলধারার সংবাদমাধ্যম ভিত্তিহীন প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, যা আবারও সরকারিভাবে প্রচারিত বিবৃতির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে’।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ‘২০১৯ সালে ভারত সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেয় এবং জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ—এই দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করে। এর ফলে অঞ্চলটি সম্পূর্ণরূপে দখলে চলে যায়। একই সঙ্গে বহিরাগতদের বসবাসের অধিকার দেওয়ার পথ সুগম হয়, যা কাশ্মীরে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদের জন্ম দেয়’।
এদিকে এই ঘটনায় এক বিবৃতিতে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাম জেলায় পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে মাত্র কয়েকদিন পর, যখন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির কাশ্মীরকে ইসলামাবাদের ‘জাগুলার ভেইন’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
জেনারেল আসিম মুনির যখন কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘জাগুলার ভেইন’ বলেন, তখন তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে কাশ্মীর পাকিস্তানের জন্য জীবন-মরণ প্রশ্নের মতো গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে এই নির্মম হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নামে একটি ছায়া সংগঠন, যা নিষিদ্ধ ঘোষিত পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার (এলইটি) সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
টিআরএফ একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বার্তায় দাবি করেছে, তারা কাশ্মীরে ৮৫ হাজারের বেশি ‘বহিরাগত’ বসতির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ছিল, যা অঞ্চলটিতে একটি ‘গঠনগত পরিবর্তন’ (ডেমোগ্রাফিক চেঞ্জ) আনতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তাদের ভাষ্যমতে, এই নীতির প্রতিক্রিয়াতেই তারা হামলার সিদ্ধান্ত নেয়।
তবে এখনো পর্যন্ত ভারত সরকারের পক্ষ থেকে টিআরএফ-এর জড়িত থাকার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু নিশ্চিত করা হয়নি।