আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের পর থেকেই দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল দখলে নেয়া শুরু করেছে তালেবান। প্রায় প্রতিদিনই তারা নতুন নতুন এলাকা সরকারি বাহিনীর হাত থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে। এমন অবস্থায় মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীকে সহায়তা করা কয়েক হাজার আফগান নাগরিককে সপরিবারে আশ্রয় দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউস ও কাবুলের মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে আল-জাজিরা।
মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, ভিসা আবেদন প্রক্রিয়াধীন থাকা আফগানদের ফ্লাইট শুরু হবে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে। কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স রস উইল উইলসন বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ‘অপারেশন অ্যালায়েস রেফিউজ’ পরিচালনা করা হবে। যেসব ব্যক্তি ব্যক্তিগতভাবে বিশাল ঝুঁকি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেবা করেছেন, তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হবে এই পুনর্বাসন অভিযানের মাধ্যমে।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার শুরুর পর থেকেই প্রবল শক্তিতে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল দখলে নেয়া শুরু করেছে তালেবান। প্রায় প্রতিদিনই তারা নতুন নতুন এলাকা সরকারি বাহিনীর হাত থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে। ইতোমধ্যে ইরান, পাকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান সীমান্ত ক্রসিং দখলে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সশস্ত্র সংগঠনটি। মার্কিন গোয়েন্দাদের ধারণা, বিদেশি সেনা প্রত্যাহার শেষ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে আফগান সরকারকে হটিয়ে কাবুলের ক্ষমতা দখল করবে তালেবান।
মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যমতে, ইতোমধ্যে আফগানিস্তান থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ মার্কিন সেনা প্রত্যাহার হয়েছে। দেশটিতে পশ্চিমা বাহিনীর প্রধান ঘাঁটি বাগরাম আফগান বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওয়াশিংটনে ডেকে পাঠানো হয়েছে মার্কিন কমান্ডার জেনারেল অস্টিন ‘স্কট’ মিলারকেও।
গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন প্যাসকি সাংবাদিকদের বলেছেন, মার্কিনিদের সহায়তাকারী আফগান নাগরিক ও তাদের পরিবারগুলোর পুনর্বাসনে ‘তাৎক্ষণিক নজর’ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি জানিয়েছেন, একটি বিশেষ কর্মসূচির আওতায় দোভাষী, কেরানি, ড্রাইভারসহ প্রায় ২০ হাজার আফগান ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ভিসা আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এসব ভিসার অনুমোদন এবং জরুরি পুনর্বাসন পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে মার্কিন কংগ্রেসে একটি আইন প্রণয়নের প্রস্তুতি চলছে।
জেন প্যাসকি জানিয়েছেন, এই আফগানদের একটি বড় অংশ সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে পুনর্বাসিত হবেন, যেখানে তাদের মেডিকেল চেকআপ, আবাসন ও অন্যান্য সহযোগিতা দেয়া হবে। আর যাদের ব্যাকগ্রাউন্ড পরীক্ষা এখনো শেষ হয়নি, তারা বিদেশে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি অথবা তৃতীয় কোনো দেশে স্থানান্তরিত হবেন, যেখানে ভিসা প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা নিরাপদ থাকতে পারেন।
তবে কোন দেশের সামরিক ঘাঁটি বা তৃতীয় কোন দেশ এই স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় জড়িত, তা ‘নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের’ কারণে জানাননি হোয়াউট হাউসের এ কর্মকর্তা।
মার্কিনিদের সহায়তাকারী আফগান নাগরিকদের পুনর্বাসনের এই পরিকল্পনা চলছে কয়েক সপ্তাহ ধরে। আফগানিস্তান থেকে তাদের তুলে নেয়ার অনুমোদন দিয়েছেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছিলেন, আমাদের যারা সাহায্য করেছে, তাদের ফেলে যাওয়া হবে না।
জেডআই/এএমকে
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন